বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষ প্রায়ই দুইটি কমন রোগে ভুগে এক হলো ডায়াবেটিস, অন্যটি কিডনির সমস্যা। এর পেছনে রয়েছে আমাদের নিজেদেরই এক মারাত্মক ভুল তা হলো সাদা চিনি বা রিফাইন সুগার খাওয়া।
কিন্তু এর বিকল্প হিসেবে যে আমাদের দেশেই উৎপাদিত সহজলভ্য লাল চিনি / ব্রাউন সুগার রয়েছে তা আমরা ভুলে যাই। আমরা সকলে যে সাদা চিনি খেয়ে ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, লিভার বিকল করছি তা থেকে আমাদের রেহাই দিতে পারে কিন্তু এই লাল চিনি।
লাল চিনি হলো সরাসরি আখ থেকে তৈরি অপরিশোধিত কোন ধরনের ক্যামিকেল বিহীন তৈরি চিনি। এখানে আখের সব উপাদান থাকে। একদম ভেজালবিহীন। অপরদিকে সাদা চিনি রিফাইন করার ফলে প্রাকৃতিক ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান সব দূর হয়ে যায়। শুধু কার্বোহাইড্রেট রাখা হয়। আর এই কার্বোহাইড্রেট শরীর গ্রহণ করতে পারে না।
সরাসরি কার্বোহাইড্রেট শরীরের মধ্যে পয়জন তৈরি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই ডঃ উইলিয়াম মার্টিন এই সাদা চিনিকে সরাসরি হোয়াইট পয়জন বলেছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, বাজার থেকে এত দাম দিয়ে আমরা সাদা চিনি কিনে আসলে বিষ খাচ্ছি।
লাল চিনির উপকারিতা অনেক। লাল চিনির মধ্যে রয়েছে আখের সব উপাদান যেমন- শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যামাইনো এসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রাইবোফ্লোবিন, ফলিক এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি।
১. লাল চিনি খেলে হাড় শক্ত ও মজবুত হয়।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধে লাল চিনি সহায়তা করে।
৩. লিভারকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
৪.লাল চিনি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৫.শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়।
৬.জন্ডিসের প্রকোপ কমায়।
৭. শরীরে গ্লুকোজের ভারসাম্য বজায় রাখে ফলে ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি কমে।
৮.সকল প্রকার প্রাকৃতিক উপাদান থাকায় হার্ট অ্যাটাক, লিভার ড্যামেজের মত রোগের ঝুকি একদমই থাকেনা।
এছাড়া দেশে উৎপাদিত লাল চিনি কিনে আমরা দেশের চিনিকল শ্রমিকদের বাঁচাতে পারি। বর্তমানে চিনির মিল রেট ৬০ টাকা দরে বিক্রি না হওয়ার এইসব শ্রমিকেরা পথে বসেছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে। চিনিকল থেকে বেতন পাচ্ছে না অধিকাংশ শ্রমিক।
তাই আমাদের উচিত লাল চিনি কিনে নিজে বাঁচা ও নিজের দেশের মানুষকে বাঁচানো। চিনিকলের শ্রমিকদের বিনাবেতনে না মেরে দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোর উচিত লাল চিনি বেশি বেশি বাজারজাতকরণ করা এবং সেইসাথে সর্বসাধারণের উচিত সাদা চিনি পরিহার করে লাল চিনি ব্যবহার করা।