আমাদের গতানুগতিক একটি ধারণা হলো বয়স বাড়লে চুল পাকে। তাই যখন অল্প বয়সী কারো পাকা চুল যখন আমাদের নজরে পড়ে আমরা একটু অবাকই হই বলতে গেলে। তবে চুল যে শুধু দাদা দাদী নানা নানীদের পাকতে হবে তা কিন্তু না। মানুষের যে কোনো বয়সে চুল পাকতে পারে। এমনকি হাই স্কুল বা কলেজে পড়া শিক্ষার্থীরও।
একজন মানুষের কত তাড়াতাড়ি চুল পাকবে তা মূলত নির্ধারিত হয় জিন দ্বারা। এক্ষেত্রে বংশগত কারণটিই অন্যতম। পরিবারে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কারও অকালে চুল পেকে যাওয়ার ইতিহাস থাকলে এমনটা হতে পারে। তার মানে হলো অধিকাংশ জনেরই এমন বয়সে চুল পাকতে ধরবে যে বয়সে তাদের বাবা মা, দাদা-দাদীর প্রথম চুল পেকেছিল।
এছাড়াও অল্প বয়সে চুল পাকার বা ধূসর হওয়ার আরো অনেকগুলো কারণ রয়েছে –
- হাইপোথাইরয়েডিজম ও হাইপারথাইরয়েডিজম- রক্তে এই দুই হরমোনের সমস্যার কারণে চুল অকালে পাকতে পারে।
- মানসিক অবসাদ, মানসিক চাপ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা এগুলো মানুষের রক্তে সেরাটোনিন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তারুণ্য ধরে রাখার ক্ষেত্রে সেরেটনিন হরমোন অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। ফলে সেরাটোনিন কমে যাওয়ায় ত্বক ও চুলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
- যেসব মানুষ স্মোকিং করে নিয়মিত তাদের চুল তাড়াতাড়ি পাকে।
- ভিটামিনের অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফোলেট, ভিটামিন বি–১২, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডির অভাবে অকালে চুল পেকে যায়।
- চুল শুকানোর জন্য গন ঘন ইলেকট্রনিক ড্রায়ার ব্যবহার , চুল অতিমাত্রায় ডাই বা রং করা, স্ট্রেইটনার ব্যবহার, রাসায়নিক প্রসাধনীর ব্যবহার এসব করলেও চুল অকালেই পেকে যায়।
- অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, উচ্চমাত্রার প্রোটিন, অতিমাত্রায় কোমল পানীয় ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং বয়স অনুযায়ী ওজন বেশি থাকলেও চুল অকালে পাকতে পারে।
- কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় চুল পেকে যায়।
- অটো ইমিউন ডিজিজ যেমন ভিটিলিগো রোগ, অ্যালোপেসিয়া অ্যারিয়াটা হলে চুল সাদা বা ধূসর হয়ে যায়।
- অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে দেহের ফ্রি রেডিক্যাল এবং এন্টি অক্সিডেন্টের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। ফলে চুলের ফলিকল সেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে, মেলানিন কমে যায় এবং চুল তাড়াতাড়ি পাকে।