উদ্বিগ্নতা হলো কোনো কিছুর প্রতি ভয় বা দুশ্চিন্তা। কোনো ব্যক্তিবর্গ, কোনো জিনিস বা কোনো ঘটনার প্রতি ভয়, ফোবিয়া থেকেই উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই অকারণে, অযৌক্তিক ভয় পান। এবং তাঁরা চেষ্টা করেও সেই উদ্বেগ ও ভীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাদের উদ্বিগ্নতা দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে। তাদের ক্ষেত্রে, ‘অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার’ কথাটা প্রযোজ্য।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা উদ্বিগ্ন হতেই পারি। তবে সেই উদ্বিগ্নতা স্থায়ী হলেই সমস্যা। দীর্ঘস্থায়ী উদ্বিগ্নতা আমাদের জীবনের গতি কমিয়ে দেয়। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বাধা দেয়। জীবনের উন্নতিকে থামিয়ে দেয়। আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য থেকে দূরে সরে আসি। ধীরে ধীরে আমাদের নিজের অজান্তেই আমরা ‘ উদ্বিগ্নতা ‘ নামক এই খাচায় নিজেদের বন্দি করে ফেলি। কিন্তু আমরা চাইলেই আবার পারি এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে, নিজেদের ইচ্ছাশক্তিকে উদ্বিগ্নতার কাছে হেরে যেতে না দিতে।
মানুষের মনের দিক দিয়ে শক্তিশালী হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনে ঘটনা ঘটবেই। কোনোটা ভালো ঘটনা, কোনোটা খারাপ। তাই নেতিবাচক কিছু হলে বা ঘটলে সেটাকে নিয়ে সবসময় দুশ্চিন্তা করলে হবে না। সেই অবস্থা থেকে আমাদের উঠে আসতে হবে। অবশ্যই একা না পারলে অন্য মানুষকে বলতে হবে। যখন আমরা দুশ্চিন্তার কারণ আমাদের আশেপাশের আপন মানুষকে বলবো, জীবনে কোন কিছু নিয়ে নিরুৎসাহিত হলে উৎসাহিত করতে বলবো, মানসিক অবস্থার বর্ণনা দিবো ঠিক তখনি কিন্তু আমরা নিজেদের ভেতরে উদ্বিগ্নতার বোঝা থেকে একটু হলেও রেহাই পাবো। এবং এটাই আমাদেরকে উদ্বিগ্নতা জয় করতে অনেক সাহায্য করবে।
এছাড়াও কখনো যাতে নিজেকে দোষারোপ করতে না হয় আমরা সেদিকে নজর দিবো। উদ্বিগ্ন থাকলে আমাদের জানা জিনিসও আমরা ভুল করতে পারি। যা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় নেতিবাচক প্রভাব পেলে। তাই তখন নিজেকে যাতে দোষারোপ না করতে সেজন্য এখন নিজেকে সহজ রাখার চেষ্টা করতে হবে আমাদের । কী সমস্যা তৈরি হবে, সেটা না ভেবে বর্তমান সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। ভালোভাবে চেষ্টা করে থাকলে কর্মফল আপনাআপনিই আমাদের কাছে চলে আসবে। কারণ ফল নিয়ে চিন্তা না করলে আমরা কখনোই উদ্বিগ্ন হবো না। তবেই আমরা একটি উদ্বিগ্নতাবিহীন জীবনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।