বাঙালি নারীদের শাড়ি একান্ত সঙ্গী উৎসব আর উপলক্ষে, পালা আর পার্বণে।পরার সুবিধা শাড়িকে কিছু পেছনে ফেললেও এর আবেদন কমেনি এখনো। বরং পরিধানরীতিতে নতুন মাত্রা শাড়িকে দিয়েছে নতুনতর লুকে নানা পোশাকের উপস্থিতি করে থাকে ।
পরিধেয় শাড়ি বাঙালি নারীর সব সময়েরই প্রিয় । তবে সময়ের পরিবর্তনে পরিধেয়টি প্রধান থেকে অন্যতমে জায়গা পেয়েছে।আর বাঙালির শাড়ি পরার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের। তবে এমনকি পৃথিবীর যে কয়টি জাতিগোষ্ঠী হাজার বছর ধরে তাদের প্রাচীন পোশাক এবং এর ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছে, বাঙালি এবং তার শাড়ি সেগুলোর মধ্যে একটি।
ভাবনায় যোগ হয় দেশীয় ফ্যাশনের পোশাক নব্বই দশকের শুরুর দিকে বাঙালির পোশাক। তবে যেখানে প্রচলিত পোশাকের উপস্থাপন হয় ভিন্ন আয়োজনে। সামাজিক উৎসবগুলোতে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর পোশাক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে এবং একই দশকের শেষের দিকে ধর্মীয় । পোশাকে ডিজাইনারদের ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে শুরু করে। কাপড়ের বুনন ও নকশায় তৈরি হয় বৈচিত্র্য। রঙের ব্যবহারে আসে নতুনত্ব। সুতরাং বাঙালি তাদের বহুল প্রচলিত পোশাকগুলো আবিষ্কার করে নতুন আঙ্গিকে।
তবে বৃষ্টি ও কাঠফাটা রোদ নিয়ে এ সময়ের আবহাওয়া যেন কনট্রাস্ট নেচারে রূপ নিয়েছে।আর বিরূপ হলেও এই দুই ঋতুর মেলবন্ধন দেখা যাবে ঈদের পোশাকে। তবে ডিজাইনাররাও উৎসব এবং আবহাওয়াকে মাথায় রেখেই তৈরি করেছে তাদের কালেকশন। আর তাই ফ্যাশন সচেতনরাও চান উৎসবের সময় নিজেদের সাধ্য এবং সাধের মধ্যে সবচেয়ে ভালো পোশাকটি। আর এ ক্ষেত্রে মেয়েরাই এগিয়ে। মেয়েদের পোশাকের কথা ভাবলেই প্রথমে চলে আসে শাড়ি। তবে শাড়ি বরাবরই বৈচিত্র্যপূর্ণ পোশাক।
তবে গরমে সুতি শাড়ি মানেই আরাম। তেমনি রাতের পার্টিতে দেখা মিলবে সিল্ক, জর্জেটের বাহার ঈদে দিনের বেলায় যেমন সুতি শাড়ি দেখা যাবে। আর সুতির ক্ষেত্রে তাঁতের শাড়িই সবার আগে। তবে এখন এ ধরনের শাড়িতেও দেখা যায় বৈচিত্র্য। আর হাতের কাজ, মেশিনের কাজ, কখনো স্ক্রিন বা ব্লক প্রিন্ট, কখনো হ্যান্ড পেইন্ট। তবে এমনকি ফ্লোরাল ও জিওমেট্রিক প্যাটার্নও দেখা যাবে শাড়ির জমিনে।
মসলিনের কদর বেড়েছে শাড়িতে । প্রাধান্য পেতে পারে রাতের শাড়িতে মসলিন। কখনো আর্টিফিশিয়াল ফেদার, কাটওয়ার্ক, পুঁতি ও জরির কাজ, অ্যাপ্লিকে শাড়িতে এমব্রয়ডারি, পাড়ে বসানো বড় প্লিট,। হাতের কাজ বেশি দেখা যাবে সিল্কের শাড়িতে । আর তার মধ্যে মেশিন ও হাতের এমব্রয়ডারিই বেশি থাকবে। তবে কনট্রাস্ট ফ্যাব্রিকের শাড়িও রয়েছে ট্রেন্ডে। রয়েছে অর্ধেক সিল্ক এবং অর্ধেক মসলিন শাড়ি। তার মধ্যে হালকা অ্যাম্বেলিশমেন্ট দেখা মিলবে জর্জেটের শাড়িতে ফ্লোরাল প্রিন্ট।
রাতের পার্টিতে শাড়ির সঙ্গে পরে নিতে পারেন জ্যাকেট ও আবহাওয়ায় গ্রীষ্মের প্রভাব বেশি থাকলে। আর তবে সেটি হতে হবে হালকা ওজনের কাপড়ে তৈরি। তাঁরা চাইলে ট্রেন্ডি লুকের জন্য বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন আর যাঁরা জ্যাকেট এড়িয়ে চলতে চান। তবে সেটা হতে পারে লেসের, মেটাল বা কাপড়ের। আর সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে বিভিন্ন রকমের বাকলস।
এন্ডি সুতির প্রাধান্য বেশি দেখা যাবে স্বস্তির কথা মাথায় রেখে সুতি, খাদি, লিনেন। আর তার পাশাপাশি সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, মসলিন, শিফন, জর্জেটের প্রাধান্য দেখা যাবে। কাপড়ের বুননে দেখা যাবে ভিন্নতা। তবে মসৃণ কাপড়ের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম জেকার্ড কাপড়ের দেখা মিলবে, সঙ্গে আছে বিভিন্ন রকমের প্রিন্টের বাহার। আর রঙের ক্ষেত্রে স্নিগ্ধতা যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে বাহারি রঙের ব্যবহার বা কনট্রাস্ট। তবে সাদা, হালকা রঙের শেড, লাল, কমলা, বেগুনি, অ্যাশ, ম্যাজেন্টা, গোলাপি ইত্যাদি রঙের শেডও চোখে পড়বে।
আর এখন শাড়ি পরার ক্ষেত্রেও এসেছে নতুনত্ব। তবে আগের মতো ট্র্যাডিশনালা ব্লাউজ দিয়ে শাড়ি না পরে অনেকেই, বিশেষ করে তরুণীরা ক্রপটড, শার্ট, টপ, টি-শার্টকে শাড়ির চমৎকার সঙ্গী করেছেন। তেমনি উচ্ছলতাও প্রকাশ পায় ,তাতে বেশ একটা ট্রেন্ডি লুক যেমন এসেছে। তবে পরার মুনশিয়ানায় খুব সাধারণ শাড়িও অসাধারণ হয়ে ওঠে। শাড়ি পরার চল কমেছে। তাই নিরীক্ষাধর্মী পরিধানরীতি শাড়ির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। আর কম বয়সীরা সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, স্কার্ট-টপস, প্যান্টস-শার্ট, টি-শার্টের স্বাচ্ছন্দ্য মেনে নিয়েও শাড়ির প্রতি আগ্রহী হচ্ছে এবং পরছে।
থিমে তেমনি ডিজাইনাররা করছেনে বিভিন্ন ধরনের নিরীক্ষাধর্মী শাড়ি ও বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস, যেমন শাড়ি করেছে বিভিন্ন ডিজাইন । আর ফলে এবার ঈদে স্পষ্ট শাড়ির বৈচিত্র্য। তবে আর এটা বেশ আশা জাগানো।আর এমনকি তাঁতের শাড়িতেই দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন ডিজাইন। ফলে শাড়ি নিয়ে হতাশ হওয়ার কারণ ঘটছে না।
তবে শাড়ি নিয়ে এই উচ্ছ্বাস সত্যিই শাড়ির ভবিষ্যৎকে আরও সুগম করে। নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করে। কিংবা উপহার দেওয়ার জন্য ঈদে সবাই শাড়ি কিনেও থাকেন নিজে পরার জন্য । তবে এর মধ্যে দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে ভোক্তারা আন্তরিক পৃষ্ঠপোষণা দিয়ে থাকে শাড়িকে।আর এভাবে করে টিকে থাকছেন এই শিল্প ও শিল্পীরা