আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি আগের দিনের উপাচার্যের বাসভবনের গেটে ছিল । তবে আজ সকালে তার কিছুই নেই। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্য এম আবদুস সোবহান সপরিবার বাসভবন ছেড়ে গেছেন। তবে বাসভবনের ভেতরে গেটের পাশে পাহারায় আছেন কেবল পুলিশের একজন সদস্য ও দুজন প্রহরী। আর বাসভবনের চত্বরে কাজ করছেন কয়েকজন মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
তবে প্রহরী দুজন জানান, গতকাল উপাচার্য চলে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখা বাসভবনের গেট বন্ধ করে দিয়েছে। আর এখন আর সেখানে কেউ নেই।তবে কোনো দাপ্তরিক কাজও নেই বাসভবনে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে ছিলেন পুলিশের সদস্যরা ও প্রধান ফটক, সিনেট ভবন, কাজলা গেট । অতিরিক্ত একটি গাড়িকে দেখা গেল টহল দিতে তবে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের নিয়মিত টহল গাড়ির পাশাপাশি।
তবে শুক্রবার হলেও সকালে খোলাই ছিল প্রশাসন ভবন। ভবনের গেটেও কেবল একজন প্রহরী। তবে তিনি জানান, ভবনে সকালে কেবল সহ-উপাচার্যের দপ্তরে দু-একজন কর্মকর্তা ঢুকেছেন। আর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করেন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য দপ্তরের আরও তিন-চারজন কর্মকর্তা। তবে ৯টা ২০ মিনিটে গাড়ি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে নামেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। আর গতকাল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন।
নিয়োগ পাওয়া লোকজনের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন কর্মকর্তা, ৮৫ জন নিম্নমান সহকারী এবং ২৪ জন সহায়ক কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র ও নিয়োগ তালিকায় দেখা যায়। তবে এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতা-কর্মী, সাংবাদিক নেতাসহ চারজন সাংবাদিক রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ১২ (৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিম্নলিখিত প্রার্থীদের তাঁদের নামের পাশে বর্ণিত পদ ও স্থানে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) অনধিক ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো তাঁদের নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে,। তবে এ নিয়োগ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।’ আর এ ছাড়া নিয়োগপত্রে বলা আছে, প্রার্থীদের নিয়োগ যোগদানের দিন থেকে কার্যকর হবে।
সদ্য চাকরি পাওয়া বেশ কয়েকজনের সঙ্গে রংপুর ডেইলী প্রতিবেদকের কথা হয়। তবে তাঁরা কেউই গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। তাঁরা আর বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় চাকরি পেয়ে তাঁরা উপাচার্য আবদুস সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে একই সঙ্গে আবার অসন্তুষ্ট।আর তিনি তাঁদের নিয়োগকে স্থায়ীভাবে করে দিয়ে যেতে পারেননি।তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে সেটাও তাঁরা মনে করেছিলেন একসময় উঠে যাবে।তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা জানতে পারেন, আলাদাভাবে এই ১৪১ জনের নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ।আর এ জন্য তাঁরা তাঁদের চাকরি স্থায়ী করতে পারবেন
কি না, সে বিষয়ে বেশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তবে কেউ কেউ বলছেন, তাঁদের চাকরি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়েরর উপ-রেজিস্ট্রার মো. মখলেছুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যলয়ে অ্যাডহকে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এই সময় শুরু হয় সংশ্লিষ্ট পদে যোগদানের দিন থেকে। আর ছয় মাস পর যদি ওই ব্যক্তি আবার চাকরি করতে চান, তখন তাঁকে বিশ্ববিদ্যলয়ে আবেদন করতে হয়। তবে বিশ্ববিদ্যলয় বিবেচনা করলে পুনরায় ছয় মাস বাড়বে, আর না বিবেচনা করলে তাঁর চাকরি সেখানেই শেষ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্তদের পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নজির রয়েছে যদিও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।