আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনি যখন কোনো কাজে পা বাড়াবেন, আপনাকে থামিয়ে দেবার জন্য বেপরোয়া স্রোতের মতো ধেয়ে আসবে দুনিয়াবি বিপদ।
ওখানেই দাঁড়ান। পিছনে ফিরে দেখা আপনার জন্য আবশ্যক নয়। আপনি কি দেখতে পান না, ঝড় যতই প্রবল হোক না কেন একটা সময় ঠিকই শান্ত হয়ে যায়।
আপনার জীবনের যাবতীয় বিপদ, সবই কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত। আপনি যখন আল্লাহর দিকে ফিরে আসছেন, তখন আল্লাহ আপনাকে কিছু বিপদাপদের মাধ্যমে যাচাই করে নেন যে আসলেই আপনি ইসলামের পথে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারবেন কি-না!
যদিও আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা সব কিছুই জানেন, তবুও তিনি চান আপনি যেন নিজের প্রচেষ্টাতেই সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন।
একটি ইমারত দাঁড়িয়ে থাকে শতসহস্র ইটের উপর ভিত্তি করে। সেই ইট কাঁচা মাটির তৈরি। মাটি থেকে ইট হবার ইতিবৃত্ত আমাদের কারোরই অজানা নয়। ভঙ্গুর মাটি থেকে শক্তিশালী ইট হবার পিছনের গল্পটা খুব সুখের নয়। তাকে ঝাঁপ দিতে হয়েছিল আগুনের সমুদ্রে। তারপরই সে পরিপূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছে।
একজন ইমানদার ব্যক্তির উদাহরণও সেই পোড়া মাটির মতো। তাকে পুড়তে হবে, সইতে হবে সকল তিক্ততা। তবুও সে ধৈর্যহারা হবে না। তাঁর হৃদয় আন্দোলিত হবে রবের কালামের লহরিতে। পবিত্র কালামের সেই সুর গেঁথে রবে আমৃত্যু।
মনুষ্য স্বভাবের ফলশ্রুতিতে কখনও যদি অশান্ত হয়ে যায় মন, কারো কথার বাণে বিদ্ধ হয়ে অশ্রুজলে সিক্ত হয় দু’নয়ন। তবুও চিন্তার কোনো কারণ নেই। এক আকাশ রহমত নিয়ে আল্লাহ তার হৃদয়ে লেপে দিবে শান্তির হিম শীতল পরশ।
গরীয়ান রবের আত্ম-প্রশান্তকারী কিছু আয়াতে চোখ বুলালেই আপনি পেয়ে যাবেন সেই রহমের ছোঁয়া। মুহূর্তেই আপনার ঠোঁটে কোণে ফুটে উঠবে এক চিলতি হাসির রেখা।
সূরা ফজরে শেষ কয়েকটি আয়াত ঠিক তেমনই। এখানে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, “হে প্রশান্ত আত্মা! তুমি তোমার রবের কাছে ফিরে আসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও। আর আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।” [৮৯:২৭-৩০]
এরপরও আপনার দুঃশ্চিন্তার গুটি কয়েক রেখা কি আপনার কপালকে কুঞ্চিত করে?
লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া