একবিংশ শতাব্দীর এই ডিজিটাল যুগে তথ্য প্রযুক্তিই আমাদের মূল চালিকাশক্তি। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন প্রয়োজন। এতদিন আমরা ভিডিও কনফারেন্সের জন্য অ্যাপ বলতে সব ফরেইন অ্যাপ যেমন জুম, স্কাইপ, গুগল মিট এগুলো জানতাম। এবার আমাদের দেশীয় অ্যাপ ‘বৈঠক’ এই তালিকায় যুক্ত হলো। ‘বৈঠক’ এই ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্মটি ডিজিটাল বাংলাদেশের এক পরিচায়ক। তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশেও যে অনেক এগিয়ে গেছে তারই প্রমান এই অ্যাপ উদ্ভাবন।
ইতিমধ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের তৈরি করা ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্ম ‘বৈঠক’র বেটা সংস্করণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ২৫ এপ্রিল অনলাইনে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে এর উদ্বোধন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে তথ্যই হয়ে উঠেছে প্রধান চালিকাশক্তি। আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ব্যবস্থাপনায় তৈরি বৈঠক প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্পের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে না পারলে বহুমাত্রিক উপযোগিতা থেকে আমরা বঞ্চিত হবো। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, “মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে এবং সার্বিক যোগাযোগ আরও বেগবান করতে ‘বৈঠক’ প্ল্যাটফর্মটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
অনলাইন উদ্বোধনে আরো উপস্থিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “বৈঠক ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্ম আত্মনির্ভরশীল ডিজিটাল বাংলাদেশের এক নতুন মাইলফলক। ‘বৈঠক’ প্ল্যাটফর্মটি হোস্ট করা হয়েছে আমাদের নিজস্ব ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারে। ফলে বৈঠকে যে ভিডিও, তথ্য শেয়ার করা হবে সব কিছুই আমাদের বাংলাদেশেই থাকবে। বৈঠক’ প্ল্যাটফর্মের বেটা ভার্সন ব্যবহারের মাধ্যমে যে সকল পরামর্শ পাওয়া যাবে সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘বৈঠক’ ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।”
দেশীয় ‘বৈঠক’ অ্যাপটি কোনো থার্ড পার্টি বা ম্যান ইন দ্যা মিডল দ্বারা চালিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই ভয় নেই কোনো তথ্য চুরির। কারণ এই অ্যাপ ব্যবহারকারীর কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিভাইস হতে ভিডিও ও অডিও এনক্রিপটেড অবস্থায় সার্ভারে পাঠানো হয় এবং তা এনক্রিপটেড অবস্থায় অন্যান্য সংযুক্ত ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে ডিক্রিপ্ট করা হয়। বৈঠক’ প্ল্যাটফর্মের সকল তথ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সঞ্চালিত হবে এবং রেকর্ডিং সমূহ বিসিসি’র জাতীয় ডাটা সেন্টারে রক্ষিত হবে, ফলে বাংলাদেশ সরকারের যে কোন ভিডিও কনফারেন্সের তথ্য সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বৈঠক প্ল্যাটফর্মটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে চলবে এবং এরপর আরো উন্নয়ন করে এটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হবে। সর্বোপরি আমরা যেন অতি শীঘ্রই দেশের তৈরি এই ভিডিও প্লাটফর্ম অ্যাপটি ব্যাবহার করতে পারি এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।