“
রাস্তার ধারের পাগল মহিলাটি আজ আয়েশ করে বিরিয়ানি খাচ্ছে। পাশে মিনারেল ওয়াটারের একটি এক লিটারের নতুন বোতল। বোতলটির মুখ খোলা। বোতলে মধ্যে পানির অবস্থান দেখে মনে হয়, এখন পর্যন্ত এক তৃতীয়াংশ পানি ব্যবহার করা হয়েছে।
এতটুকু লক্ষ করেই আয়াত খুব দ্রুত হেঁটে চলছে। যোহরের আজান অনেক আগেই হয়ে গেছে। বাসায় গিয়ে নামাজ পড়ার জন্যই তার এত ব্যস্ততা।
সময় দেখার জন্য সে হাতের কব্জি থেকে বোরখাটা সাবধানে একটু সরিয়ে নিল। কালো হাত মোজার উপর কালো চেইনের একটি সুন্দর হাতঘড়ি শোভা পাচ্ছে। আয়াত তাতে চোখ বুলালো। ঘন্টার কাঁটা ২এর ঘরে আর মিনিটের কাঁটা ৩ এর ঘরে। এর মানে হলো, দুপুর দুইটা বেজে পনের মিনিট।
পরীক্ষা দিতে দিতে আজ তার বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে। যদিও পরীক্ষা শেষ হবে জাস্ট ৩টায়। কিন্তু ততক্ষণ এক্সাম হলে থাকলে, যোহরের নামাজটা কাজা হয়ে যাবে এবং আল্লাহর নেওয়া পরীক্ষায় সে ফেইল করবে।
কিন্তু আয়াত সেটি চায় না। তাই প্রশ্ন পাওয়ার পর থেকেই সে তড়িঘড়ি করে লিখতে শুরু করেছিল। উদ্দেশ্য একটাই-“নামাজ কাজা করা যাবে না।” ১০০ মার্কের ভিতর সে ৯০ মার্কের একদম নির্ভুল এনসার করেছে। বাকীগুলো একটু চিন্তা করলেই পাওয়া যেত। কিন্তু চিন্তা করার মতো সময় তার ছিল না। লাস্ট এক্সামটা এভাবে দিয়েও তার অন্তরে শান্তি বিরাজ করছে। সে যে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে পেরেছে এটাই তার আত্মতৃপ্তির মূল হেতু।
খেল-তামাশার এই দুনিয়া আয়াতের কাছে কিছু নয়। নামাজ কাজা করে আল্লাহর নির্দেশ সে কিছুতেই অমান্য করতে পারবে না। এর পরিণাম যে কত ভয়ংকর তা সে ভালো করেই জানে।
বাসায় পৌঁছে নামাজ পড়ে নিয়ে সে ঐ পাগল মহিলাকে নিয়ে ভাবতে লাগলো। কিছু রহস্যময় এবং জটিল প্রশ্ন তার মস্তিষ্কের অলিগলিতে বেপরোয়া ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আয়াত সেগুলোর কোনো সঠিক সমাধান বের করতে পারছে না। কী সেই প্রশ্ন? আর কি-বা তার রহস্য!
Writer: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া