কোনো ওয়াক্তের আযান দেওয়ার সাথে সাথেই আমি তাকে মিনতি করি নামাজ আদায় করতে। কখনো শোনে তো কখনো শোনে না। এই পড়ছি, একটু পর, এই যাচ্ছি ওজু করতে- এভাবেই কাটিয়ে দিত।
আমি হতাশ হলাম না। আমি অনুরোধের পর অনুরোধ করতে লাগলাম। মাঝে মাঝে কান্না করে ফেলতাম। তবুও যেন সে নামাজে যায়, মসজিদের সাথে তার সম্পর্কটা ভাল হয়।
এদিকে আয়েশার থেকে কিছু ইসলামিক স্কলারের নাম শুনলাম। মুফতি মেন্ক, তারিক জামিল, নোমান আলী খান, ড. জাকির নায়েক, রাহে বেলায়েত বইটির লেখক ড. আব্দুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর (রহি.) সহ আরও অনেকে লেকচার শুনি।
এনাদের লেকচার শুনে অনেক কিছু জানতে পারি। কখনো কেঁদে ফেলি, কখনও বা খুশিতে আমার চোখ চকচক করে উঠে।
একদিন আয়ানের সামনে বসে ওর প্যান্ট মুড়িয়ে টাখনুর উপর তুলে দেই। পরম ভালবাসায় টাখনুর নিচটা দুই হাতে ধরে বলি, “আমি চাই না, তোমার এতটুকু অংশও জাহান্নামের আগুনে জ্বলুক। এখন থেকে আর টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে কোনো কাপড় পড়িয়ো না, প্লিজ।”
প্রথম প্রথম সে বিরক্ত হতো। আমি বুঝতে পারতাম। কিন্তু ও খুব যত্ন করে বিরক্তিভাব লুকোতে পারত। আমি যেহেতু ওকে পড়ে ফেলতে পারি, তাই খুব ইজিলি আমার চোখে ওর বিরক্তি বা রাগ ধরা পড়তো।
আমি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে অনেক কাঁদতাম। নিজের জন্য, আমার গর্ভের বাচ্চাটির জন্য আর আয়ানের জন্য। আমাদেরকে যেন উনি জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করেন-এই দু’আ আমার প্রত্যেকবার তাহাজ্জুদের সিজদায় বলতাম। আল্লাহ্ খুব তাড়াতাড়ি আমার দু’আ কবুল করেন এবং আমাকে ধৈর্যের পরীক্ষায় ফেলেন।
তিন মাসের মাথায় আয়ান আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয় আর তার কিছুদিন পরে আমি একটি ফুটফুটে মৃত কন্যা প্রসব করি।
[আয়ানের মৃত্য এবং আমার মৃত কন্যা হওয়া বিষয়টি পুরোপুরি জানবেন পরবর্তী পর্বে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya