“নিয়তি” পর্ব-১৪

খালাকে জিজ্ঞেস করতেই খালা জানালেন এটা তার ছেলের রিক্সা। দুপুরে খেতে এসে একটু ঘুমিয়ে আবার বেরিয়ে গেছেন।

অনেক কথার সাথে এটাও জানলাম, আয়েশা ঢাকায় যে ভার্সিটিতে পড়ে, সেখান থেকে আমাদের বাসা খুবই কাছে। ওর ফোন নাম্বারটা নিয়ে ওকে আমার বাসার ঠিকানা দিলাম। জানালাম, যেকোনো দিন সে চলে আসতে পারে। আমি বাসায় একা থাকি। আয়ান অফিস শেষে সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফেরে। সুতরাং আয়েশার পর্দা নিয়ে কোনো ভয় নেই।
এরপর অন্য এক আয়রা হয়ে আমি খালার সাথে বাসায় ফিরলাম।

.
তারপর থেকে সবকিছু যেন দ্রুত ঘটে গেল। আমরা গ্রামের বাসা থেকে পরেরদিনই ঢাকায় চলে এলাম। আয়েশার থেকে আমি যতটুকু জেনেছি তার কিছু কিছু আয়ানের সাথে শেয়ার করলাম। ওর তেমন কোনো ভাবান্তর না হলেও আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতো।

আমি ধীরে ধীরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া আরম্ভ করলাম। মাঝে মাঝে ফজর মিস যেত। একবার ইউটিউব স্ক্রলিং করতে করতে একটি ভিডিও সামনে এলো। ফজরের নামাজের ফজিলত ও নামাজ কাযা করার ভয়াবহ্ শাস্তি সম্পৃক্ত। পুরো ভিডিও দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। আর সেদিনই সিদ্ধান্ত নিলাম যেভাবেই হোক ফজরের নামাজ আর কাজা করব না।

হাজারো চেস্টা, কয়েক দফা এলার্ম সেট করে করে আমি ফজরের নামাজ কন্টিনিউ করতে পারলাম, আলহামদুলিল্লাহ। এরই মাঝে আয়েশার সাথে ফোনে কথা বলার সময়, সে আমাকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার কথা বললো। এই নামাজ কন্টিনিউ করতে পারলে আমি নাকী আমার রবের অনেক প্রিয় বান্দী হতে পারব। এই নামাজের আরও অনেক ফজিলত সম্পর্কে আমাকে জানালো।

তাহাজ্জুদ সম্পর্কিত একটি হাদিস শুনে আমি আবেগে আপ্লুত হলাম। হাদিসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহামহিম আল্লাহ্‌ তা’আলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে এমন যে, আমার নিকট চাইবে। আমি তাকে তা দিব। কে আছে এমন যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।
[সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১১৪৫]

গুনাহের সমুদ্রে ঢুবে যাওয়া এই আমি খানিকটা ভরশা পেলাম। শুরু হলো আমার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার প্রচেষ্টা। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ্ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছেন। ইদানীং কোনো এলার্ম ছাড়াই আমি উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করতে পারি। আমার রব আমাকে জাগিয়ে দেন।

এখন আমি মেহনত শুরু করলাম আয়ানের পিছনে।
[চলবে]

Writer: Mahazabin Sharmin Priya

Leave a Comment