Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    • Home
    • Rangpur
    • International
    • Islamic
    • Life Style
    • Insurance
    • Health
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    Relationship

    তরুণ আলিমের মায়ের প্রতি ভালোবাসার যুগান্তকারী গল্প

    মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়াBy মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়াJuly 18, 2023Updated:January 11, 2025No Comments5 Mins Read
    OIG.1Gw8.OeJUCI5VWAt

    অনেক আগের কথা। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এক শান্তিপূর্ণ গ্রাম। খুব বড় কোনো গ্রাম নয়। ৩০-৪০ টা পরিবার থাকে সেখানে। সেখানে বসবাস করতেন এক নিবেদিতপ্রাণ আলিম, দীনের ঝাণ্ডা উড্ডয়নে যিনি নিজেকে উৎসর্গিত করেছিলেন। নাম আহমাদ। যুবক বয়স থেকেই আহমাদের ভেতরে ছিল জ্ঞান অর্জনের তীব্র পিপাসা। তাঁর হৃদয় ছিল ইমানের আলোয় আলোকিত। তিনি সারাদিন অতিবাহিত করতেন কুরআন অধ্যয়নে ও শেখানোয়। রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের হাদিসের দরস দিতেন কচি কচি তালিবুল ইলমদের।

    আহমাদের ইলমি জীবন ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু যে জিনিসটা তাকে অন্যদিকে আলাদা করেছিল তা হলো তাঁর মা আয়িশার প্রতি তাঁর ভালোবাসা। তিনি একজন সদয় এবং ভদ্র মহিলা ছিলেন যার ভালবাসা এবং নির্দেশনা আহমাদকে শ্রেষ্ঠত্বে পৌঁছে দিয়েছিল। আহমাদকে বড় করার জন্য আয়েশা তার নিজের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষাকে উৎসর্গ করেছিলেন। ফলে আহমাদও এর প্রতিদানে মায়ের প্রতি ব্যাপক কর্তব্যবোধ অনুভব করত।

    প্রতিদিন, আহমাদ ফজরের আগে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন এবং গভীর চিন্তায় মগ্ন হতেন। এরপর ফজরের আজান হলে মসজিদে যেয়ে সালাত আদায় করতেন। তারপর সূর্যোদয়ের পর বাসায় ফিরে তিনি তার প্রিয় মায়ের জন্য পুষ্টিকর নাস্তা তৈরী করতেন। যত্ন সহকারে তাজা তাজা ফল সাজিয়ে দিতেন খাবার টেবিলে। সুন্দর করে মায়ের জন্য নাস্তা বানিয়ে সামনে নিয়ে যেতেন। সকালের খাবারের সুগন্ধ তাদের ঘরের প্রতিটি কোণে পৌঁছে যেত। উষ্ণতা এবং ভালবাসার অনুভূতি দিয়ে আচ্ছন্ন করত ক্ষুদে বাড়িটাকে।

    সারা দিন ধরে আহমাদ তার ইলমি কাজে ব্যস্ত থাকতেন। তালিবুল ইলমদের দারস দিতেন, নানা পরামর্শ দিতেন। সমাজের নানা মানুষকে নানা সহযোগিতা করতেন, তাদের দীনি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতেন। কিন্তু তিনি যতই ব্যস্ত থাকতেন না কেন, তিনি সবসময় তাঁর মায়ের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে রাখতেন। এই সময়টা তিনি কাউকে দিতেন না। তখন তিনি তার পাশে বসতেন, মনোযোগ সহকারে তার গল্প শুনতেন। তার বিজ্ঞ পরামর্শ চাইতেন।

    এক মেঘে ঢাকা সকালে আয়িশা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লেন। গ্রামবাসীরা সবাই জড়ো হল। সবাই তাদের সমাজের এই প্রবীণ লোকটিকে নিয়ে চিন্তিত। আহমাদের হৃদয় মুষড়ে পড়ল মায়ের কষ্ট দেখে। তিনি মায়ের যত্নে নিজেকে উৎসর্গিত করে দিলেন। দিনরাত মায়ের সেবা করতে থাকলেন। যত ধরণের চিকিৎসা করা সম্ভব কোনোটাই বাদ দিলেন না।

    দিন গড়াল সপ্তাহে। আহমেদের দিন-রাত আশা ও হতাশার অন্তহীন চক্রে ঝাপসা হয়ে যায়। দিন গড়ায় আর মায়ের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। এরপরও তিনি অবিচল থাকলেন। মনোবল হারালেন না। কারণ দীন তাকে শিখিয়েছে সকল পরিস্থিতিতে মনোবল অটুট রাখতে।

    আহমাদের ভালোবাসা ও ত্যাগ বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর মা-ও। তিনি দেখছিলেন তাকে কষ্ট পেতে দেখে কীভাবে তাঁর ছেলের চোখ দিয়ে অবিরাম জল গড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু ছেলের চোখেমুখে দৃঢ়তার ছাপও দেখতে পেলেন তিনি। আয়িশা দুর্বল হয়ে পড়লেও জ্ঞানবুদ্ধি হারাননি। ছেলেকে শিয়রের পাশে ডাক দিলেন।

    তিনি ফিসফিস করে বললেন, “আহমাদ, বেটা আমার।” তাঁর গলার স্বর শান্ত কিন্তু কেমন একটা প্রজ্ঞার আভা আছে সেখানে। “তুমি আমার জন্য যা করছ সেই রহমতের কদর মাপতে পারব না আমি। কিন্তু তোমার প্রতি আমার একটা পরামর্শ থাকবে যে, তুমি অবশ্যই ইলমের পথে তোমার যাত্রা অব্যাহত রাখবে। সর্বদা দীনের খেদমত করে যাবে। অনেকের জীবনকে উপকৃত করেছ তুমি। আজ তুমি আলিম হয়েছ। আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত।”

    মায়ের কথা শুনে আহমদের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। তিনি মায়ের দুর্বল হাত ধরে ছিলেন। মায়ের ভালবাসা এবং কৃতজ্ঞতার ওজন অনুভব করছিলেন।

    “মা,” আহমাদ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললেন। “তোমার সুখ আর কল্যাণকামনাই আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এই সংকটময় মুহূর্তে তোমার পাশ থেকে চলে যাওয়ার চিন্তা আমি কল্পনাও করতে পারি না।”

    আয়েশা মৃদু হাসলেন। তার চোখ দুটো ভালবাসায় টইটম্বুর হয়ে গেল।

    “আহমদ, সোনা ছেলে আমার,” তিনি ফিসফিস করে বললেন। “আল্লাহর সেবা করে এবং জ্ঞান অন্বেষণ করে তুমি তোমার রব আর আমাকে উভয়কেই সম্মানিত করতে পারবে। সম্প্রদায়ের প্রতি তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করো। মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দাও। মানুষের মুখে মুখে তোমার নাম ছড়িয়ে পড়বে। আর তোমার মা হয়ে সবার মাঝে বেঁচে থাকব আমি। আমাদের এই বন্ধন এই জাগতিক দুনিয়া পেরিয়েও টিকে থাকবে চিরকাল।”

    আহমদ মাথা নাড়ল, তার হৃদয় ভারাক্রান্ত কিন্তু তাঁর মন দৃঢ়চেতা। তিনি তার মাকে জড়িয়ে ধরলেন। একে অপরে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেন।

    পরবর্তী দিনগুলোতে আহমাদ তাঁর ইলমি যাত্রা অব্যাহত রাখলেন। কারণ তাঁর মায়ের স্মৃতিই তাকে এই কাজে অব্যাহত থাকার অনুপ্রেরণা যোগায়। আয়িশার বিয়োগব্যথায় পুরো গ্রাম ডুকরে কেঁদে ওঠে। কিন্তু আহমাদের শিক্ষা এবং দীনি খেদমতের পেছনে তাঁর স্পৃহার কারণে আয়িশা জীবিত থাকেন সকলের অন্তরে।

    কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। আহমাদের নাম মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তিনি পরিচিতি পেয়ে যান বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ আলিম হিসেবে। তার মায়ের প্রতি তার ভক্তি গভীর শ্রদ্ধার প্রতীক হয়ে ওঠে। একজন মানুষ যতই ইলমের দিক দিয়ে উপরে উঠুক না কেন, পিতামাতাকে তাঁর শ্রদ্ধা করতে হবেই।

    আহমদের ইলমি প্রচেষ্টার বিকাশ ঘটে এবং তিনি গভীর মমতা ও প্রজ্ঞার সাথে সমাজের সেবা করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তিনি একটি ছোট ইসলামি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেখানে তিনি কেবল কুরআনের শিক্ষাই দেননি বরং দয়া, সম্মান এবং ধার্মিকতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন।

    আহমদের শিক্ষা অনেকের হৃদয় স্পর্শ করে। তার খ্যাতি বহুদূরে ছড়িয়ে পড়ে। দূরবর্তী দেশ থেকে ছাত্ররা তাঁর কাছে আসত মহামূল্যবান ইলম অর্জনের জন্য, তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে। মানুষেরা তাঁর ইমানের দৃঢ়তা ও প্রয়াত মায়ের প্রতি তাঁর ভক্তির প্রশংসা করত।

    আহমাদ ইলম অর্জনে পূর্ণ মনোযোগী থাকলেও তার মা তাকে যে শিক্ষা দিয়েছিলেন তা তিনি কখনই ভুলে যাননি। তিনি নিয়মিত মায়ের কবর জিয়ারত করতে যেতেন। মায়ের প্রেমময় আত্মার স্মৃতি থেকে শক্তি অর্জন করতেন। তিনি কবরের সামনে কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করতেন। মায়ের জন্য দুআ করতেন।

    সময়ের সাথে সাথে, আহমদের শিক্ষার প্রভাব সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি যে মূল্যবোধের শিক্ষা দিতেন অর্থাৎ — দয়া, সহানুভূতি এবং পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধা — যারা তাঁর কাছে থেকে এসব শিক্ষা নিয়েছিল এই মহান গুণগুলো তাদের জীবনেও ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর শিক্ষায় শিক্ষাণ্বিতদের পরিবারের পারিবারিক অবস্থা আরো দৃঢ় হয়, সন্তানেরা তাদের পিতামাতার খেদমত বাড়িয়ে দেয়। এভাবে সামাজিক বন্ধনও দৃঢ় হতে শুরু করে।

    আহমাদের মৃত্যুর পরও তাঁর শিক্ষার প্রভাব সমাজে অটুট থাকে। তাঁর নিবেদিতপ্রাণ শিষ্যতা তাঁর শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে থাকে পৃথিবীর বুকে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তা বাহিত হতে থাকে। ইমানের ব্যাপারে তাঁর দৃঢ়তা এবং মায়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে দাঁড়ায় যা অসংখ্য মানুষকে দীনদারিতা ও তাকওয়ার পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।

    মহান আলিম আহমাদের গল্প প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সময়ের বাধা পেরিয়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। তাঁর গল্প মানুষকে জ্ঞান, ভালোবাসা এবং সন্তান ও তার পিতামাতার মধ্যে বিদ্যমান ভালোবাসার সম্পর্কের পরিবর্তন করার অপার ক্ষমতাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকে।

    আল্লাহ আমাদেরকে জ্ঞান অর্জনের তাওফিক দিন। শায়খ আহমাদের মতো হওয়ার তাওফিক দিন। বাবা-মায়ের খিদমত যেন করতে পারি তার তাওফিক দিন। আমিন।

    মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
    • Website

    আমার নাম মাহাজাবিন শরমিন প্রিয়া। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছি। ইসলাম, প্রযুক্তি এবং গণিতসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখিতে আমার গভীর আগ্রহ রয়েছে। আমার জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে আমি পাঠকদের জন্য অর্থবহ ও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করি। মাহাজাবিনের লেখা বিষয়বস্তু তথ্যসমৃদ্ধ এবং পাঠকের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়।

    Related Posts

    প্রেমে জড়ালো না তো আপনার সঙ্গী

    February 3, 2025

    মেজর ডালিমের সাক্ষাতকার ২০২৫

    January 6, 2025

    মনেরে প্রেমময় আবেগ কমানো হয়েছে কিভাবে?

    March 8, 2024
    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক
    • সুস্থ যৌনজীবনের জন্য জরুরি ১০টি পরামর্শ
    • গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর যত্নের সম্পূর্ণ গাইড
    • ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার কৌশল
    • ডিপ্রেশন মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সমাধান
    • ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা
    • শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার উপায়
    • শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস
    • গরমে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় ও বর্জনীয়
    • শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব
    • মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকার কৌশল
    • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
    • চোখের সুস্থতা বজায় রাখার ঘরোয়া টিপস
    • হার্টের যত্নে কোন খাবার বেশি খাবেন
    • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি
    • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়
    • প্রেমে একে অপরকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব
    • দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন করে সাজানোর কৌশল
    • প্রেমে আস্থা নষ্ট হলে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন
    • সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলেশনশিপ পরিচালনার টিপস
    • প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে রাগ কমানোর ৫টি পদ্ধতি
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.