সুদ প্রথা টাকা দিয়ে টাকা উপার্জন করা, ইসলামী সমাজে একটি অমার্জনীয় অপরাধ। ইসলামের দৃষ্টিতে ইহা একটি মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক শোষণের কৌশল। ইসলামে এই অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। কারণ ইহা ব্যক্তি, মানুষ ও সমাজকে নিঃস্ব করে দেয়। ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধি, সমাজের ক্ষমতাহীন মানুষেরা তার হৃত অধিকার কিংবা অন্যের অধিকারকে করায়ত্ব করার লক্ষ্যে দুর্নীতিপরায়ণ দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে যে অবৈধ অর্থ কিংবা পণ্যসামগ্রী পর্দার অন্তরালে প্রদান করে থাকে ইহাই ঘুষ কিংবা উৎকোচ নামে পরিচিত।
সুদ ও ঘুষ সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে বলেছেন : ‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারককে উৎকোচ দিও না।’ (বাকারা ১৮৮)
যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তির ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ করেই পাগল করে দেয়। এটা এই জন্য যে তারা বলে বেচাকেনা তো সুদেরই মত।’ (বাকারা ২৭৫)KSRM
আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশ এসেছে অতঃপর যে বিরত রয়েছে তার অতীতের কার্যকলাপ তো পেছনেই পড়ে গেছে এবং তার ব্যাপারে সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতিয়ার।’ (বাকারা ২৭৫)
আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বৃদ্ধি করেন। আর তিনি কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না।’ (বাকারা ২৭৬)
মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় যা কিছু তোমরা সুদে দিয়ে থাক; আল্লাহর কাছে তা বর্ধিত হয় না। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের আশায় পবিত্র অন্তরে যারা দিয়ে থাকে, অতএব, তারাই দ্বিগুণ লাভ করে।’ (রূম ৩৯)
অতঃপর তোমরা যদি তা (বকেয়া সুদ) না ছাড়, তবে জেনে রেখ এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধ। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। এতে তোমরা অত্যাচার করবে না, অত্যাচারিতও হবে না।’ (বাকারা ২৭৯)
সুদ ও ঘুষ সম্পর্কে হাদীস :
ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, নিশ্চয়ই আল্লাহর নবী (সা.) সুদখোর, সুদ প্রদানকারী, সুদী কারবারের সাক্ষী এবং সুদ চুক্তি লিখনকে অভিশাপ দিয়েছেন। (বুখারী, মুসলিম)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, ঘুষ গ্রহণকারী এবং ঘুষদানকারী উভয়ের উপরই আল্লাহর লানত। (বুখারী, মুসলিম)