﴿قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ﴾
বলো, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো। [সুরা আলে ইমরান : ৩১]
এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য আমরা প্রথমে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে দাড়ি-সংক্রান্ত প্রমাণাদি দেখব। এরপর দেখব দাড়ির ব্যাপারে আলিমদের অবস্থান। আলোচনা শুরুর আগে একটি বিষয় স্পষ্টভাবে আমাদের বোঝা উচিত, মুসলিমদের করণীয় ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে কুরআন ও সুন্নাহ। আল্লাহ বলেন,
﴿وَمَا کَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّ لَا مُؤْمِنَۃٍ اِذَا قَضَی اللهُ وَ رَسُوْلُهٗۤ اَمْرًا اَنْ یَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِیَرَۃُ مِنْ اَمْرِهِمْ ؕ وَمَنْ یَّعْصِ اللهَ وَ رَسُوْلَهٗ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیْنًا﴾
আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজেদের ব্যাপারে অন্যকিছু বাছাই করার অধিকার থাকে না। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করল, সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। [সুরা আহজাব : ৩৬]
অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন,
﴿فَلْیَحْذَرِ الَّذِیْنَ یُخَالِفُوْنَ عَنْ اَمْرِهٖۤ اَنْ تُصِیْبَهُمْ فِتْنَۃٌ اَوْ یُصِیْبَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ﴾
অতএব, যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা; অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পৌঁছার ভয় করে। [সুরা নুর : ৬৩]
কুরআনের উল্লিখিত আয়াতগুলো আমাদের জানাচ্ছে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ আমাদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এসব আদেশ-নিষেধে যদি এমন কিছু থাকে, যা আমাদের সমাজে প্রচলিত নয়, সে জন্য আল্লাহ ও রাসুলের স্পষ্ট নির্দেশনায় কোনো ফাঁকফোকর খুঁজতে পারব না। নিজস্ব মত ও যুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো আদেশকে অবহেলা করে নিজেদের প্রবৃত্তির চাহিদা মেটানো বৈধ নয়।
আমরা আমাদের চারপাশে–রাস্তায়, খেলার মাঠে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এবং মিডিয়ায় ক্লিন-শেভ চেহারা দেখতে পাই। অধিকাংশ মুসলিম পুরুষ দাড়ি কামিয়ে ফেললেও এই জঘন্য কাজটা জায়িজ হবে না। কুরআন সাক্ষ্য দিচ্ছে যে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সঠিক পথে নেই,
﴿وَ اِنْ تُطِعْ اَكْثَرَ مَنْ فِی الْاَرْضِ یُضِلُّوْكَ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ ؕ اِنْ یَّتَّبِعُوْنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَخْرُصُوْنَ﴾
আর যারা জমিনে আছে, তুমি যদি তাদের অধিকাংশের আনুগত্য করো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা তো শুধু ধারণারই অনুসরণ করে এবং কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বলে। [সুরা আনআম : ১১৬]
এক. কুরআন ও হাদিস থেকে প্রমাণ
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,
﴿فَاَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّیْنِ حَنِیْفًا ؕ فِطْرَتَ اللهِ الَّتِیْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَیْهَا ؕ لَا تَبْدِیْلَ لِخَلْقِ اللهِ ؕ ذٰلِكَ الدِّیْنُ الْقَیِّمُ وَلٰکِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَعْلَمُوْنَ﴾
তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত করো। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ করো, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। [সুরা রুম : ৩০]
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে আরবি-ভাষার আদেশবাচক ভঙ্গিমা ব্যবহার করে আমাদের আদেশ দিয়েছেন, আমরা যেন তাঁর সৃষ্টিপ্রকৃতিকে পরিবর্তন না করি। ফিতরাতকে (স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য) অনুসরণের জন্য কুরআন-সুন্নাহ তথা রাসুল সাঃ-এর হাদিসে যেসব নির্দেশনা এসেছে, অন্তরকে তার আলোয় পরিশুদ্ধ করতে হবে।
রাসুল সাঃ সুন্দর ও উত্তম বৈশিষ্ট্যের জন্য ১০টি গুণের কথা বলেছেন। এর মধ্যে দুটি গুণ হলো গোঁফ ছাটা এবং দাড়ি লম্বা করা। তা ছাড়া পুরুষের ফিতরাত (স্বাভাবিক অবস্থা) হচ্ছে তার দাড়ি থাকবে। এটাই নারীদের থেকে তাকে আলাদা করে। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন,
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ
রাসুল সাঃ সে-সকল পুরুষের ওপর অভিসম্পাত দেন, যারা নারীদের অনুকরণ করে এবং সে-সকল নারীদের ওপর অভিসম্পাত দেন, যারা পুরুষদের অনুকরণ করে।[১]
আল্লাহর অবাধ্যতার পরিণামে শয়তান চিরকালের জন্য অভিশপ্ত হয়েছে। এরপর আল্লাহর আদেশে তাকে জান্নাত থেকে বিতাড়িত করার সময় শয়তান ওয়াদা করে, সে নিশ্চয় মানুষকে পথভ্রষ্ট করবে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বিবৃত হয়েছে,
﴿وَلَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ﴾
অবশ্যই আমি তাদের নির্দেশ দেবো, ফলে তারা অবশ্যই আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবে। [সুরা নিসা : ১১৯]
কুরআনের ব্যাখ্যাকারগণ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় দাড়ি কামানোকে ‘আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত’ করার অন্তর্ভুক্ত করেছেন।[২]
কুরআনের উপরিউক্ত আয়াত থেকে আমাদের কাছে স্পষ্ট, আমরা আল্লাহর রাসুল সাঃ-এর সব নির্দেশ মানতে বাধ্য। বেশ কিছু হাদিসে তিনি আমাদের দাড়ি না কেটে লম্বা করার নির্দেশ দিয়েছেন। দাড়ি বর্ধিতকরণ-সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস হচ্ছে :
প্রথম হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা. থেকে বর্ণিত; রাসুল সাঃ বলেছেন,
خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ، أَحْفُوا الشَّوَارِبَ وَأَوْفُوا اللِّحَى
তোমরা মুশরিকদের থেকে ভিন্নতা অবলম্বন করো; তোমরা গোঁফ কেটে ফেলো এবং দাড়ি লম্বা করো।[৩]
দ্বিতীয় হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা. থেকে বর্ণিত; রাসুল সাঃ বলেছেন,
انْهَكُوا الشَّوَارِبَ، وَأَعْفُوا اللِّحَى
তোমাদের গোঁফ কেটে ফেলো এবং দাড়ি ছেড়ে দাও (অর্থাৎ, লম্বা করো।[৪]
তৃতীয় হাদিস
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত; রাসুল সাঃ বলেছেন,
جُزُّوا الشَّوَارِبَ وَأَرْخُوا اللِّحَى خَالِفُوا الْمَجُوسَ
তোমরা গোঁফ ছেটে এবং দাড়ি লম্বা করে অগ্নিপূজকদের থেকে ভিন্নতা অবলম্বন করো।[৫]
এসব হাদিসের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট প্রতিভাত হয় যে, দাড়ি ছেটে ফেলা কাফিরদের অনুকরণের অন্তর্ভুক্ত। বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা. থেকে অন্য একটি হাদিসে আমরা দেখতে পাই, যেখানে রাসুল সাঃ বলেছেন,
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে কোনো জাতিকে অনুকরণ করবে, সে তাদেরই একজন হিসেবে গণ্য হবে।[৬]
চতুর্থ হাদিস
ইয়ামেনের শাসকের পক্ষ থেকে পারস্যের সম্রাট কিসরার মাধ্যমে দুজন দূত রাসুল সাঃ-এর নিকট এল। তাদের দাড়ি মুণ্ডানো ও গোঁফ লম্বা ছিল। রাসুল সাঃ (অদ্ভুত বেশের জন্য) তাদের চেহারার দিকে তাকাতে অপছন্দবোধ করছিলেন। তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা নিপাত যাও, তোমাদের এমনটা করতে কে বলেছে?’ তারা জবাব দিয়েছিল–‘আমাদের প্রভু!’ (অর্থাৎ, পারস্য-সম্রাট কিসরা)। রাসুল সাঃ বললেন,
وَلَكِنَّ رَبِّي أَمَرَنِي بِإِعْفَاءِ لِحْيَتِي وَقَصِّ شَارِبِي
কিন্তু আমার মহিমান্বিত ও সম্মানিত প্রভু আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন আমি দাড়ি ছেড়ে দিই; আর গোঁফ ছেটে ফেলি।[৭]
এই হাদিস কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করছে :
- রাসুল সাঃ দাড়ি কাটাকে এতটাই অপছন্দ করেছেন যে, তিনি দাড়িবিহীন চেহারার দিকে তাকাতেও ঘৃণা করেছেন। রাসুল সাঃ তাদের দাড়িবিহীন খালি চেহারার দিকে তাকানো পছন্দ করেননি।
- যে-সকল মুসলিম দাড়ি মুণ্ডন করে, তাদের মনে রাখা উচিত, কিয়ামত-দিবসে আমাদেরকে নবিজির সামনে উপস্থিত হতে হবে। আমরা পুরো জীবন যদি দাড়িবিহীন বা ক্লিন-শেভ চেহারা নিয়ে কাটিয়ে দিই, তাহলে সে দিন তাঁর সামনে দাঁড়াতে আমাদের কেমন লাগবে?
- হাদিসটি ইঙ্গিত করছে, দাড়ি কামানো অমুসলিমদের আচরণ।
- পারস্যের সম্রাট কিসরার পক্ষ থেকে এই দুজন দূত এসেছিল পরোয়ানা নিয়ে, যেন তারা তাদের সঙ্গে রাসুল সাঃ-কে নিয়ে যেতে পারে; কিন্তু রাসুল সাঃ তাদের দ্বারা প্রভাবিত হননি এবং তাদের মুখের ওপর সত্যকথা বলেন।
পঞ্চম হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনু উমর রা. বর্ণনা করেন;
أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ أَمَرَنَا بِإِحْفَاءِ الشَّوَارِبِ وَإِعْفَاءِ اللِّحَىة
রাসুল সাঃ আমাদের (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন গোঁফ ছোট করি এবং দাড়ি লম্বা করি।[৮]
ষষ্ঠ হাদিস
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الل عليه وسلم “ عَشْرٌ مِنَ الْفِطْرَةِ قَصُّ الشَّارِبِ وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ وَالسِّوَاكُ وَاسْتِنْشَاقُ الْمَاءِ وَقَصُّ الأَظْفَارِ وَغَسْلُ الْبَرَاجِمِ وَنَتْفُ الإِبْطِ وَحَلْقُ الْعَانَةِ وَانْتِقَاصُ الْمَاءِ ” .قَالَ زَكَرِيَّاءُ قَالَ مُصْعَبٌ وَنَسِيتُ الْعَاشِرَةَ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ الْمَضْمَضَةَ
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রা. বর্ণনা করেন; রাসুল সাঃ ১০টি গুণের কথা বলেছেন, যা ইসলামি ‘ফিতরাত’[৯]-এর অন্তর্ভুক্ত :
- গোঁফ ছোট করা;
- দাড়ি লম্বা করা;
- মিসওয়াক করা;
- অজু করার সময় নাক-গহ্বরে পানি দেওয়া;
- নখ কাটা;
- আঙুলের মধ্যবর্তী জায়গা ধৌত করা;
- বগলের নিচের লোম উপড়ে ফেলা;
- নাভির নিচের লোম ছেঁটে ফেলা;
- পানি দ্বারা গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করা (প্রস্রাব বা মলত্যাগের পর);
হাদিসের বর্ণনাকারী মুসআব ইবনু শাইবা বলেন, ‘তিনি দশম কাজটির কথা ভুলে গেছেন। সম্ভবত সেটা ছিল অজুর সময় মুখে পানি দেওয়া।’[১০]
সপ্তম হাদিস
আবু উমামা রা. বর্ণনা করেন;
فقُلْنا: يا رسولَ اللهِ، إنَّ أهلَ الكِتابِ يَقُصُّونَ عَثانينَهم ويُوَفِّرونَ سِبالَهم، قال: فقال النَّبيُّ ﷺ : قُصُّوا سِبالَكم ووَفِّروا عَثانينَكم، وخالِفوا أهلَ الكتابِ
আমরা রাসুল সাঃ-কে বললাম, আহলে কিতাব তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলে এবং গোঁফ লম্বা করে। তিনি তখন আমাদের নির্দেশ দেন, আমরা যেন গোঁফ ছোট করি, দাড়ি লম্বা করি এবং আহলে কিতাবের সঙ্গে ভিন্নতা অবলম্বন করি।[১১]
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় মুসনাদু আহমাদের ব্যাখ্যাকার শায়খ আবদুর রাহমান আল-বান্না (শায়খ হাসানুল বান্নার পিতা) তাঁর কয়েক খণ্ডে রচিত গ্রন্থ আল-ফাতহুর রাব্বানিতে লেখেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ইয়াহুদি ও খ্রিষ্টানরা তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলত এবং গোঁফ লম্বা করত, যেমনটা বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ করছে। এমনকি কিছু আলিমও এমনটা করছেন। লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’[১২]
অষ্টম হাদিস
ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত; রাসুল সাঃ বলেছেন,
مَنْ مَثًلً بِالشَّعَرِ فَلَيْسَ لَهٗ عٍنْدَ اللّٰهِ خًلَاقٌ
যে তার দাড়ির চুলকে বিকৃত করেছে, সে আল্লাহর ক্ষমাশীলতার কোনো অংশ পাবে না।[১৩]
হাদিস বিশেষজ্ঞগণ দাড়ির চুল বিকলাঙ্গ করার অর্থ হিসেবে দাড়ি কামানোর কথা বলেছেন। যেমন :
- ইবনুল আসির তাঁর আন নিহায়া ও ইবনু মানজুর তাঁর লিসানুল আরব (খণ্ড : ৮, পৃষ্ঠা : ২০৩)-এ লেখেন, ‘চুলকে বিকলাঙ্গ করার অর্থ গাল ও চিবুকের লোম কামিয়ে ফেলা।’
- আবুল ওয়ালিদ আল বাজি (মৃত্যু : ১০৮১ খ্রিষ্টাব্দ) আল-মুআত্তার ওপর লিখিত তাঁর ব্যাখ্যাগ্রন্থে (খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৩২) লেখেন, ‘দাড়ি কামিয়ে ফেলা বিকলাঙ্গতারই একটি রূপ।’
- আবু বকর আল কাশানি (মৃত্যু : ৫৮৭ হিজরি—১১৯১ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর বাদায়িউস সানায়ি গ্রন্থে হাদিসটির ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে— ‘দাড়ি কামানোকে বিকলাঙ্গতার সমতুল্য গণ্য করা হয়।’[১৪]
এ ছাড়া অন্য হাদিসেও বিষয়টি উল্লিখিত হয়েছে; কিন্তু যেকোনো সত্যসন্ধানীর জন্য উপরিউক্ত হাদিসগুলো যথেষ্ট।
[১] সহিহ বুখারি : ৫৪৬৫।
[২] Khizr, Khalid Mahmood (Haafiz), Why Beard? (Lahore: Maktaba Markazi Anjuman Khuddam ul Qur’an, 1991).
[৩] সহিহ মুসলিম : ২৫৯।
[৪] সহিহ বুখারি : ৫৮৯২।
[৫] সহিহ মুসলিম : ৬২৫।
[৬] সুনানু আবি দাউদ : ৩৯৮৯। শায়খ আলবানি তাঁর সহিহুল জামি ২/১০৫৮-তে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
[৭] ইবনু জারির তাবারি তারিখু উমাম ওয়াল মুলুকে উল্লেখ করেছেন। এই বর্ণনাটি আরও বর্ণনা করেছেন আলি ইবনু আসির তাঁর আল-কামিল ফিল-তারিখে (২/১৪৬) ও ইবনু কাসির তাঁর আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়াতে (৪/২৬৯)।
[৮] সহিহ মুসলিম : ২৫৯; সুনানুত তিরমিজি : ২৪৬৪।
[৯] আরবি শব্দ ‘ফিতরাত’-এর অর্থ ‘স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য’। শব্দটিকে এভাবেও অনুবাদ করা যেতে পারে–‘পুরুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য।’
[১০] সহিহ মুসলিম : ২৬১।
[১১] মুসনাদু আহমাদ : 21780
[১২] আহমাদ আবদুর রহমান আল বান্না আস-সাআতি, আল ফাতহুল রাব্বানি বি তারতিবি মুসনাদি আহমাদ ইবনি হাম্বল আল শাইবানি আল মুসনাদ (বৈরুত : দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবি) খণ্ড ১৭, পৃষ্ঠা ২৩৭, ৩১৪।
[১৩] মাজমাউজ জাওয়ায়িদ।
[১৪] Khizr, Khalid Mahmood (Haafiz), Why Beard? (Lahore: Maktaba Markazi Anjuman Khuddam ul Qur’an, 1991)