আগামী ৩০ এপ্রিল ৩৬ বছরে পা রাখবেন রোহিত শর্মা। তিন সংস্করণেই তিনি ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক। কোনো কারণে মাঠের বাইরে থাকলে হার্দিক পান্ডিয়া, লোকেশ রাহুলরা তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পালন করেন। রোহিতের পর আর কাউকে কি অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ভারত?
কালে কালে বয়স তো তাঁর কম হলো না! রোহিতের পর দায়িত্ব নেবেন কে? আর সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগে আইপিএল। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স ভারতের বিশ্বকাপ দলে কতটা প্রভাব রাখবে—এসব প্রশ্নই করা হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলীকে।
আইসিসিতে ছেলেদের ক্রিকেট কমিটির এই চেয়ারম্যান নিজেই ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়কদের একজন। খেলা ছাড়ার পর সামলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতির দায়িত্বও। নিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করায় এই কাজের মনস্তত্ত্ব যেমন জানেন, তেমনি বিসিসিআই সভাপতি হিসেবে অধিনায়ক গড়ার কাজেও পর্দার পেছনে ছিলেন সৌরভ। তাঁর নিজের এ নিয়ে ভাবনা কী?
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হার্দিক পান্ডিয়ার নাম বলেছেন সৌরভ, ‘আইপিএল খেলোয়াড় তৈরির জায়গা। আমরা দেখেছি হার্দিক পান্ডিয়া সেখানে কতটা ভালো অধিনায়কত্ব করেছে। এ কারণেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণগুলোয় সে ভারতের অধিনায়কত্বও করছে। আইপিএলের হার–জিত এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই; কারণ, এটা খুব কঠিন টুর্নামেন্ট।’
ভারত অধিনায়কের দায়িত্ব গত বছর প্রথম পান পান্ডিয়া। ১১ ম্যাচে এ পর্যন্ত ৮ জয় এনে দিয়েছেন ভারতকে। ওয়ানডেতে ১টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেও জিতেছেন। গত আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জিতিয়েছেন গুজরাট টাইটানসকে।
সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এ বছর ৫ অক্টোবর থেকে টুর্নামেন্টটি ভারতে শুরু হবে।একে তো স্বাগতিক দেশ, তার ওপর হট ফেবারিট, শিরোপা জয়ের চাপটা ভালোই থাকবে ভারতের ওপর। আর শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএলের নতুন মৌসুম, ২৮ মে শেষ হবে টুর্নামেন্ট। মাত্র চার মাসের বিরতিতে তারপর শুরু হবে বিশ্বকাপ।
স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বকাপের বছর আইপিএলে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স দল গড়ায় খুব ভালোভাবেই বিবেচনায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সৌরভ নিজের ভাবনাটা জানালেন, ‘আমার মনে হয় নির্বাচকেরা পারফরম্যান্সের ভারসাম্য রাখতে চান। তাঁরা শুধু আইপিএলকেই বিবেচনা করবেন না; হ্যাঁ, টি–টোয়েন্টি দল গড়ার সময় হয়তো ভাবতে পারেন।
সব পারফরম্যান্সই বিবেচনা করার মতো পরিণত মস্তিষ্ক আছে নির্বাচকদের। আর আছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও কোচ রাহুল দ্রাবিড়। কেমন দল চাই, তা নিয়ে তাঁদের নিজেদেরও কিন্তু বলার আছে। আমার মনে হয়, ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো হবে সেটাই তাঁরা করবেন।’
আইপিএল শেষে জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলবেন ভারতের খেলোয়াড়েরা। জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে খেলতে হবে তিন সংস্করণেরই সিরিজ। সেপ্টেম্বরে আছে এশিয়া কাপ (যদি হয়) ও অস্ট্রেলিয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে খেলতে আসবে ভারতে। পরের মাসেই শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই যে ঠাসা সূচি, তাতে ক্রিকেটাররা কি ফুরফুরে মেজাজ ও শরীর নিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন?
টানা খেলার চাপের ব্যবস্থাপনাটা ঠিকমতো না হলে চোটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। সৌরভ কিন্তু বিষয়টিকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। খেলোয়াড়েরা ঠিকই সামলে নিতে পারবেন বলে মনে করেন ভারতকে ১৪৬ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক এ অধিনায়ক, ‘আমার মনে হয় খেলোয়াড়দের অসুবিধা হবে না। আমি কোনো সমস্যা দেখি না। হ্যাঁ ঠাসা সূচি, কিন্তু এভাবেই তো হয়ে আসছে। খেলোয়াড়েরাও খেলবে। আমি সত্যিই কোনো সমস্যা দেখি না।’