বিপদে ধৈর্য ও আশা..
রাসুল ﷺ এর প্রতিদিনকার মজলিশে সাহাবিদের একটি দল উপস্থিত থাকতেন। তাঁদের একজন প্রতিদিন মজলিশে আসার সময় নিজের শিশুসন্তানকে পিঠে বহন করে নিয়ে আসতেন এবং তার সামনে বসাতেন। একদিন শিশুটি মারা গেল। ছেলের শোকে লোকটি মজলিশে আসাই ছেড়ে দিলেন। রাসুল ﷺ তার অনুপস্থিতি টের পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ কী ব্যাপার, অমুককে দেখতে পাচ্ছি না কেন?” তাঁরা জানালেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, তার ছেলেটি মারা গেছে।’
রাসুল ﷺ লোকটির সাথে দেখা করে তার ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। লোকটি ছেলের মৃত্যুসংবাদ জানালে রাসুল তাকে সান্ত্বনা দিলেন। অতঃপর বললেন:
“হে ভাই, তুমি কোনটা চাও? তুমি কি এটাই চাও যে, তার দ্বারা এ জীবনে উপকৃত হবে, না এটা চাও যে, আগামীকাল তুমি জান্নাতে গিয়ে তাকে জান্নাতের ভেতরে তোমার জন্য দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবে?” লোকটি বললেন, “হে আল্লাহর নবি, আমি চাই যে, সে আমার আগে জান্নাতে গিয়ে আমার জন্য দরজা খুলে দেবে।”
রাসুল ﷺ বললেন, “এটাই হবে।”
সুবহানাল্লাহ, কী চমৎকার পরিচর্যা। এভাবেই তিনি গড়ে তুলেছিলেন মানবেতিহাসের শ্রেষ্ঠ প্রজন্মকে। তাদের মনে গেঁথে দিয়েছিলেন, এখানে যা হারিয়েছে ওখানে তা অনেকগুণে লাভ করবে। আজকে যত কষ্ট পাচ্ছে, তার বিনিময়ে আগামীকাল সুখ-শান্তিতে ভরে উঠবে। দুনিয়ার একাকিত্ব ও নির্জনতার বিনিময়ে আখিরাতে মিলবে উত্তম সঙ্গীদের সাহচর্য।
প্রকৃত মুমিনের মনে বিপদের মুহূর্তে উক্ত মানসিকতাই কাজ করে। যার মধ্যে এ মানসিকতা অনুপস্থিত, বিপদের মুহূর্তে সে ভেঙে পড়ে। দুঃখের পরে সুখের আগমনকে সে অনেক দূরে মনে করে। এভাবে কঠিন মুহূর্তে অনেক সময় নিজের মহামূল্যবান ইমানটাই হারিয়ে ফেলে।
[ পার্থিব জীবনে জান্নাতি সুখ ; ড. খালিদ আবু শাদি ]