বোনদের খ্যাতির মোহ ও কষ্টার্জিত লজ্জা
জনৈক সেলিব্রিটি নিজ বিয়ের পর এক ভিডিওতে এসে জানিয়েছেন, তাকে কমপক্ষে ৫০/৬০ হাজার মেয়ে (যদিও এটা অত্যুক্তি হতে পারে) সরাসরি ইনবক্সে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে৷ জানি না তার জন্যে বিষয়টি গর্বের নাকি আফসোসের৷ তবে আমি মনে করি বিষয়টি একইসাথে চিন্তার ও আতঙ্কের৷
ওই ভাইটির ব্যাপারটি আমি পজিটিভলি নিচ্ছি৷ আল্লাহ তাকে নারীর ফিতনা থেকে হেফাজত করেছেন৷ আজকাল যে কেউ ফিতনায় পড়ে যেতে পারে৷ যেমনটা বাহ্যত ফিতনায় পড়ে ফেঁসে গেছেন সময়ের আলোচিত বৃদ্ধ ইমাম৷ আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুন৷
তার আরেকটি পজিটিভ বিষয় হলো, হাজার হাজার মেয়ের প্রস্তাবের ব্যাপারটি তিনি সরাসরি প্রকাশ করে ফেলেছেন৷ লুকোচুরি করেন নি৷ চিন্তা ও আতঙ্কের বিষয় আমাদের অনলাইনে বিচরণকারী বোনদের জন্যে৷ অনলাইনে পরিচিত ও খ্যাতিমান হলেই পার্সোনাল যোগাযোগ করে সম্পর্ক স্থাপন ও বিয়ের প্রস্তাব দিতে হবে কেন?
দেখেছেন বোন? শুধু আপনি একা প্রস্তাব দেন নি, আপনার মতো অর্ধলক্ষেরও (সত্য-মিথ্যা আল্লাহই ভালো জানেন) বেশি বোন প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে৷ অথচ হয়ত সবাই ভেবেছে, সে একাই প্রস্তাব দিয়েছে৷ হয়ত তেমনটা আপনিও ভেবেছিলেন৷ এটা দ্বীনদারির ছদ্মাবরণে নফসানী ধোকা বৈ কিছু নয়৷
বলতে পারেন, বিয়ের প্রস্তাবই তো দিয়েছে৷ নাজায়েয সম্পর্কের প্রস্তাব তো দেয় নি৷ ভাই, জায়েয সম্পর্কের আগের সম্পর্কটা তো নাজায়েয৷ হয়ত এই ভাইটি তাকওয়া ও সতর্কতা অবলম্বনের কারণে বেঁচে গেছেন৷ কিন্তু অনলাইন জগতে মুখোশপরা লোকদের দৌরাত্ম্যই তো বেশি৷ একটু চেহারা-সুরত ও কথাবার্তা সুন্দর দেখলেই কী মজে যেতে হবে?
এই অনলাইনেই এমন কিছু ভাই ও বোনকে দেখেছি, যারা ফিতনার আশঙ্কায় নিজ ইনফোতে ‘বিবাহিত’ লিখে রেখেছেন৷ অথচ তারা আদৌ বিবাহিত নন৷ আমি দৃঢ় আশাবাদী আল্লাহ তাদের তাকওয়ার কারণে এই অবাস্তব তথ্য দেওয়ার ত্রুটি মাফ করবেন ইন শা আল্লাহ!
আমাদের পরামর্শ হলো, যারা অনলাইনে দাওয়াতের কাজ করতে চান, মিডিয়ায় কাজ করেন, নাশিদ গান, তারা জরুরিভিত্তিতে বিয়েটা আগে সেরে নিন৷ আর নিজ ইনফোতে ‘বিবাহিত’ লিখে রাখুন৷ অবিবাহিত অবস্থায় নিজেকে মিডিয়ায় তুলে ধরা অনিরাপদ, মারাত্মক বিপদ ও সমূহ ফিতনার কারণ৷ অবশ্য বিবাহিত হলেই যে ফিতনা থেকে নিরাপদ, এমনটা ভাবাও ঠিক নয়৷
সবাই না হলেও অধিকাংশ মেয়ে খ্যাতির পেছনে ঘুরতে পছন্দ করে৷ অথচ কত অখ্যাত মেধাবী ও পরহেযগার যুবক যে দৃশ্যের আড়ালেই রয়ে গেছে, সেটা কজনই বা জানে৷ ঠিক একই কথা বোনদের ব্যাপারেও৷ বস্তুত তুলনামূলকভাবে খ্যাতিমানদের চেয়ে অখ্যাতরাই যে বেশি যোগ্য ও সচ্চরিত্রবান হয়, সেই বাস্তব সত্যটুকু জানা থাকা দরকার৷
প্রিয় বোন, আল্লাহ তাআলার কাছে ওই পাত্রের জন্যে দুআ করতে থাকুন, যে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হবে৷ দেখবেন আল্লাহ তাআলা আপনার নেক দুআ কবুল করবেন৷ একইসাথে কষ্ট, লজ্জা ও দ্বীনদারির আড়ালে নফসানী ধোঁকা থেকেও বেঁচে যাবেন৷
– সংগৃহীত