পার্টি শেষ হতে হতে রাত ৯টা বেজে গেল। আমি ফ্রেস হয়ে ফ্রিজ থেকে বেশ বড় সাইজের একটা কমলা হাতে নিয়ে কিচেনের দিকে পা বাড়ালাম। কিচেনে আলেয়া খালা ছাড়া আর কেউ নেই। আমার মনে পড়ল আলেয়া খালা পার্টিতে ছিলেন না। উনি তেমন কিছু খেতেও পারেননি।
আর দেরি না করে খালার থেকে একটা প্লেট চেয়ে নিলাম। ফ্রিজ থেকে কয়েক রকমের মিষ্টি, সন্দেশ রেখে যেই না রসমালাই দিতে যাব। মা এসে আমাকে থামিয়ে দিলেন। বললেন,
-এগুলো কী তুই খাবি?
: ইয়ে, আসলে…..আমি এগুলো আলেয়া খালাকে দিতে চেয়েছিলাম। উনি তো পার্টিতে ছিলেন না। শুধু কাজই করে গেছে। আমরা তো কত কিছু খেলাম। খালা তো খেতে পারেনি, মা। আমি এগুলো দেই মা, প্লিজ?
-কেন দিবি না? অবশ্যই দিবি। কিন্তু এত কম কেন? আলেয়াকে একটা মিষ্টি দিলেও সে খাবে না। ঐ মিষ্টি বাড়ি নিয়ে গিয়ে ছেলে মেয়েকে দিয়ে দিবে। তাই জন্য আমি ওকে কিছু দিলে এমন ভাবে দেই যাতে তিনজনে বেশ ভালমতো খেতে পারে। তুই একটু ওয়েট কর। আমি কয়েকটা পট নিয়ে আসি।
এই কথা বলে, মা কয়েকটা ঢাকনা সমেত বাটি নিয়ে এলো। ৯রকমের ৯টা মিষ্টি, ৯টা সন্দেশ একটা বাটিতে তুলে ঢাকনা দিয়ে টেবিলে রাখলো। এরপর আমি একটা দইয়ের বাটি আর একটা রসমালাইয়ের বাটি মাকে দিয়ে বললাম, “এই দু’টো পুরোটাই দিয়ে দাও মা। আমরা তো যখন তখন এগুলো খাই, কিন্তু ওনারা তো সবসময় খেতে পারেন না।”
মা খুব খুশী হয়ে গেল। এগুলো সব আমাকে দিয়ে বললো আলেয়া খালাকে যেন আমি নিজের হাতে দেই। আমি কিচেনে গিয়ে খালাকে এগুলো দিতেই খালা খুশিতে কেঁদে ফেললেন। বললেন,
-মায়ো! তোমরা মোক এতকিছু ক্যান দিছেন?
:খালা, আমি মা হতে যাচ্ছি। এই খুশীতে দিয়েছি। আপনি আমার জন্য দু’আ করবেন।
-আলহামদুলিল্লাহ! কি খুশির কতা শুনাইলেন মা তোমরা। মুই তো খুব খুশি হইচো। হ, দু’আ কইরবান্নাও ফির? এইগ্লা কি কন তোমরা? আইজে তাহাজ্জুদের নামাজোত আল্লাক কইম। তোমার মন দিল তোমার মায়ের মতোই ভালো। আল্লাহ্ যুগ যুগ দুধে-ভাতে বাঁচি থুক তোমাক।
আমার খুব ভাল লাগলো। আমি খালার সাথে আরও কিছুক্ষণ কথা বললাম। অনেক অজানা কথা জানলাম।
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya