আগামী জুনে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি জানিয়েছেন, ডিজেল আনার জন্য ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে পাইপলাইন নির্মাণ হয়ে গেছে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
নসরুল হামিদ বলেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানির জন্য ভারত অংশে ৫ কিলোমিটারসহ প্রায় ১৩১ দশমিক ৫ কিলোমিটার ইন্ডিয়া–বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপিএল) নির্মাণ করা হয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির প্রি-কমিশনিং কার্যক্রম চলমান। আগামী জুন মাসে ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানির কমিশনিং তথা পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল আমদানি শুরু হবে বলে আশা করা যায়।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে (জুন ২০২২ পর্যন্ত) দেশে মজুত গ্যাসের পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। মজুত গ্যাস দিয়ে প্রায় ১১ বছর দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ (১ জুলাই, ২০২২) প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশে মোট উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য গ্যাসের মজুত ২৮ দশমিক ৫৯ টিসিএফ।
উত্তোলনের শুরু থেকে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ক্রমপুঞ্জিত গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১৯ দশমিক ৫৩ টিসিএফ। সে হিসেবে উত্তোলনযোগ্য অবশিষ্ট মজুতের পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৬ টিসিএফ। গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দৈনিক গড়ে প্রায় ২ হাজার ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। সেই বিবেচনায় অবশিষ্ট মজুতকৃত গ্যাস দ্বারা প্রায় ১১ বছর বাংলাদেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, এ বছর রমজান মাস, গ্রীষ্মকাল ও সেচ মৌসুম একই সময়ে হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। বৈশ্বিক জ্বালানিসংকটের কারণে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ খাতকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবতায় সব বিদ্যুৎ গ্রাহককে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানাকে গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করা অর্থনৈতিক গতিশীলতার স্বার্থে একান্ত অপরিহার্য বিবেচিত হয়। পক্ষান্তরে গৃহস্থালি বা আবাসিক শ্রেণিতে গ্যাসের সংযোগ প্রদান করা অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থকে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তা ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) সহজলভ্যতা এবং ব্যবহার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় গৃহস্থালি পর্যায়ে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান পরিপত্রের মাধ্যমে বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ পর্যাপ্ত না বাড়লে এবং শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা হ্রাস না পেলে আবাসিক গ্যাস সংযোগ উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে না।
সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ৫টি কয়লা খনির সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ৭ হাজার ৮২৩ ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন।