বসতবাড়ির জমি নিয়ে বিদ্যালয়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে হামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের জাবরহাট উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা (স্যাকমো) ও তাঁর বোন গুরুতর আহত হয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা। সোমবার বিকেলে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সিঙ্গারোল উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন জুবায়ের ইবনে নুর ও তাঁর বোন মোছা. বেনজীর আক্তার। তাঁদের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
ভূমি জরিপকারী ঘটনাস্থলে এসে জমি মাপেন। এর পরপরই বাড়িটির পশ্চিম প্রান্তে বেড়া ও লাকড়ি রাখার ঘর ভেঙে ফেলেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সূত্রে জানা যায়, সিঙ্গারোল উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের পূর্ব পার্শ্বে জাবরহাট উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্যাকমো জুবায়ের ইবনে নুরের পৈতৃক বাড়ি। ওই বসতবাড়ির দুই হাত জায়গার দখল নিয়ে ওই পরিবার এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। ভূমি জরিপকারী (আমিন) দিয়ে ওই জমি মাপার উদ্যোগ নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা প্রশাসনের ভূমি জরিপকারী ঘটনাস্থলে এসে জমি মাপেন।
এর পরপরই বাড়িটির পশ্চিম প্রান্তে বেড়া ও লাকড়ি রাখার ঘর ভেঙে ফেলেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে লোকজন। জুবায়ের ইবনে নুর ও তাঁর বোন বেনজীর আক্তার বাধা দিতে গেলে ওই গ্রামের সোহরাব, খালেক, লিমন, শান্ত প্রমুখ ব্যক্তিরা তাঁদের এলোপাতাড়ি লাঠি, ইট ও খন্তা দিয়ে আঘাত করেন। এতে জুবায়ের ও তাঁর বোন গুরুতর জখম হন। প্রতিবেশীরা তাঁদের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
জুবায়ের ও বেনজীর আক্তার অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও হাজীপুর ইউপির চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে থেকে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে বেড়া ও ঘর ভাঙার নির্দেশ দেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক ও প্রতিবেশী লোকজন এ সময় মাঠে দাঁড়িয়ে এ ঘটনা নীরবে দেখছিলেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজীপুর ইউপির চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দু-তিন হাত জায়গা অমীমাংসিত ছিল। আমরা জমির পজিশন বরাবর খুঁটি পুঁতে দিয়েছি। বাড়ির লোককে পিটানোর কোনো ঘটনা ঘটতে আমি দেখিনি।’
এ ব্যাপারে গতকাল রাত সোয়া নয়টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার নজিরের বলেন, তিনি আবেদন পেয়ে ভূমি জরিপকারী পাঠিয়েছিলেন। দুপুরে বিরোধপূর্ণ জমি মেপে ওই ভূমি জরিপকারী কার্যালয়ে ফিরে এসেছেন। মারধরের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।