মহাকাশে বিজ্ঞানীরা ২০২২ সালে নতুন নতুন গ্রহ আবিষ্কার করে চমক দিয়েছেন। আমাদের সৌরজগতের বাইরে গত বছর ২০০ নতুন গ্রহ আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। একে মহাকাশবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের আবিষ্কার বলা হচ্ছে। গত বছরের শুরুতে সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কৃত গ্রহের মোট সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারের কম। কিন্তু বছরের শেষ দিকে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৩৫টিতে। খবর এনডিটিভির।
আমাদের সৌরজগতের বাইরে গ্রহ বা এক্সোপ্লানেট আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে নাসার জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ। হাবল টেলিস্কোপের পর মহাকাশে পাঠানো সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ এটি। তবে হাবল টেলিস্কোপটি এখন সক্রিয় রয়েছে। এ টেলিস্কোপ থেকেও নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছেন গবেষকেরা। তবে গত জুলাই মাসে কার্যক্রম শুরুর পর জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি একের পর এক চমক দিয়ে যাচ্ছে।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপটির উত্তরসূরি হিসেবে তৈরি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তৈরিতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। ইনফ্রারেড ক্যামেরা ব্যবহার করে মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করছে টেলিস্কোপটি। এটি পৃথিবী থেকে ১০ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত। নাসার বিজ্ঞানীরা এই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে পাওয়া ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বের এক রঙিন ছবির বিষয়টি সামনে আনেন। এরপর আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দূরতম স্থানে পৃথিবীসদৃশ একটি গ্রহে পানি থাকার চিহ্নও শনাক্ত করে হইচই ফেলে দেয় এ টেলিস্কোপ। বৃহস্পতির অভূতপূর্ব ছবি দিয়ে বিশ্ববাসীকে বিমোহিত করে এটি। এই টেলিস্কোপের উদ্দেশ্যে হচ্ছে নক্ষত্রের জীবনচক্র নিয়ে গবেষণা করা। এ ছাড়া সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো নিয়ে গবেষণা করাও এর উদ্দেশ্য।
নাসার এক টুইটে বলা হয়েছে, ‘আমরা ২০২২ সাল যখন শুরু করেছিলাম, তখন শনাক্ত হওয়া গ্রহের সংখ্যা পাঁচ হাজারের কম ছিল। কিন্তু বছর শেষে তা ৫ হাজার ২৩৫টিতে দাঁড়িয়েছে। এসব গ্রহের মধ্যে ৪ শতাংশ পৃথিবী ও মঙ্গলের মতো পাথুরে। নতুন বছরে আমরা কি পাব? আমরা আরও বেশি গ্রহের খোঁজ পাব।’
বিজ্ঞানীদের মতে, এক্সোপ্লানেট গঠন ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নানা রকম হতে পারে। এর মধ্যে কিছু গ্রহের আকার ছোট ও পাথুরে। এসব গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর মিল পাওয়া যাবে। গত বছরের সর্বশেষ আবিষ্কৃত গ্রহটির নাম এইচডি ১০৯৮৩৩ বি। এটি মূলত নেপচুনের মতো গ্রহ, যা তার নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তন করছে।
সম্প্রতি গবেষকেরা আরও দুটি পানিসমৃদ্ধ গ্রহ শনাক্ত করার দাবি করেছেন। যদিও এসব গ্রহে সরাসরি পানি আবিষ্কৃত হয়নি; তবে এর গঠন থেকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেখানে অর্ধেকের বেশি পানি থাকতে পারে।