একটা বৈপরিত্য খেয়াল করেছেন কি?
ফেমিনিস্ট আইডিওলোজি প্রভাবিত বোনেরা অন্য বোনদেরকে নিজেদের শিক্ষা, ক্যারিয়ার নিয়ে উচ্চাকাংখী হবার প্রতি উতসাহিত করেন। সাধারনভাবে কোন মানুষের উচ্চাকাংখী হওয়া দোষের কিছুনা। কিন্তু খেয়াল করলে এই বোনদের মধ্যে একটা ‘অদ্ভুত’ বৈপরিত্য দেখা যায়।
সংসার, বাচ্চা সামলে পিএইচডি করা, বিয়ে-সন্তান ধারনে ডিলে করে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করা, সংসারের কঠিন দায়িত্বের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের দায়িত্বের ভার বহন করা- এগুলো কোনটাই সহজ কাজ না।
অনেক স্ট্রাগল করে একজন মেয়েকে এগুলো চালিয়ে যেতে হয়। আর একজন মুসলিমাহর জন্য তো এগুলো আরও অনেক কঠিন।
কিন্তু স্ট্রাগল করে নারীদের শিক্ষাক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়া এই বোনেদের উচ্চাকাংখা দ্বীনের ক্ষেত্রে কোথায় যেন হারিয়ে যায়।
তাদের স্ট্রগল করার আগ্রহের ফিল্ড হল কো-এডুকেশন ক্যাম্পাসে, নিজেকে স্বামীর ‘অনুগত না’ দেখানোতে, পুরুষ স্কলারদের ‘বায়াস’ খুজে বের করাতে, কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে (এই কর্মক্ষেত্র আবার শুধুমাত্র মেডিকেল আর শিক্ষকতা নয়)।
স্ট্রাগল করে পি এইচ ডি করতে চাওয়া এই বোনেরা কিন্ত তাফসীর, হাদিস, ফিকহ পড়ার জন্য স্ট্রাগল করছেন না। তারা কিন্তু সাহাবিয়াত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার লাইফস্টাইল ফলো করার জন্য স্ট্রাগল করছেন না।
:
-আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মেয়েদের জন্য ঘরে থাকাকে উত্তম বলেছেন।
-খাদীজা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা ইসলাম গ্রহণের পরে ব্যবসা করেননি।
– আইশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা পর্দার আড়ালে থেকে পুরুষদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলেছেন।
-সাহাবিয়্যাত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুন্না পুরুষদের সামনে নিজেদের চেহারা উন্মুক্ত করতেন না।
-স্ত্রীদের জন্য স্বামীর আনুগত্য করা বাধ্যতামূলক ( যতক্ষন তা শরীয়াহ সম্মত)।
-নির্দিষ্ট দূরত্বের বেশি মাহরাম ছাড়া ট্রাভেল করা যাবেনা।
উপরের এই বিষয়গুলো সহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে কেন যেন সেই বোনেরা স্ট্রাগল করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। খুজে খুজে নিজেদের নফসকে খুশি করার মত ফতোয়া নিয়ে আসেন।
কেউ কেউ খাদীজা রাদ্বিআল্লাহু আনহাকে বর্তমান যুগের ‘সিইও’ দাবী করে নিজেও এরকম ক্যারিয়ার চান, কেউ কেউ নিকাব খুলে ফেলেন, কেউ কেউ নিজের খাহেশাতকে জাস্টিফাই করতে হাদীসকে বাতিল করার চেষ্টা করেন……
উচ্চশিক্ষা , পি এইচ ডি , ক্যারিয়ারকে শক্তভাবে আকড়ে ধরা বোনেরা কেন যেন দ্বীনের নারী স্পেসিফিক বিষয়গুলোকে হালকা করে উড়িয়ে দেন। এসব ক্ষেত্রে তাদের উচ্চাকাংক্ষাও কোথায় যেন হারিয়ে যায়। অথচ তারা নিজেদেরকে মুসলিম নারীদের মুক্তির বার্তাবাহক মনে করেন।আবার সুযোগ পেলেই ঘরে থাকা নারীদের, নিজেদের পূর্বপ্রজন্মের নারীদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নিয়ে সুকৌশল তাচ্ছিল্য করেন।
বোনেরা, তাদেরকে ফলো করার আগে, তাদের পথকে সঠিক মনে করার আগে একটু ভেবে দেখুন তো তাদের উচ্চাকাংখার মধ্যে এই বৈপরিত্য কেন? এই অসংগতি কেন?
ফার্স্ট চান্সেই যারা দ্বীনে ছাড় দিচ্ছেন, নিজেদের মন মত দ্বীন ব্যাখ্যা করছেন তারা আপনাদেরকে যে নারী মুক্তির আলো দেখাচ্ছেন সেটা একজন মুসলিমাহর জন্য আত্নহননের আগুন ছাড়া কিছুই না।
– ফুটস্টেপস অফ সাহাবিয়াত
©