বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ‘স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ’ করেছেন বলে মামলার ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র্যাব যে দাবি করেছে, সেই তথ্যপ্রমাণ দেখতে এবার র্যাব সদর দপ্তরে গেছেন তাঁর বন্ধু ও সহপাঠীরা। আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে তাঁরা সেখানে যান।
গত বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, ঘটনার দিন (৪ নভেম্বর দিবাগত রাত) ২টা ২৬ মিনিটে ফারদিন সুলতানা কামাল সেতুর তারাব প্রান্তে ছিলেন। ২টা ৩৪ মিনিটে তিনি সেতুর মাঝামাঝি স্থানে আসেন। ওই সময় তিনি সেতু থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন। রাত ২টা ৩৫ মিনিটে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ হয়। ২টা ৫১ মিনিটে তাঁর হাতের স্মার্ট ওয়াচ (ঘড়ি) পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে যায়।
ফারদিন কেন স্বেচ্ছায় নদীতে লাফ দিয়েছিলেন—এমন প্রশ্ন করা হলে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, তাঁরা কয়েকটি বিষয় তদন্ত সংস্থাকে (ডিবি) জানিয়েছেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষার্থীরা কথা বলতে র্যাব সদর দপ্তরে এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যান বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা করেন তাঁরা। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় গ্যাপ আছে, কিছু অস্পষ্টতা আছে। এগুলো আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার।’
বুধবার বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানায়, ফারদিন ডেমরার সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ডিবি পারিবারিক চাপ, দুই ভাইয়ের পড়াশোনার টাকা জোগানো, ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে স্পেনে যাওয়ার টাকা সংগ্রহ করতে না পারাকে উল্লেখ করে।
বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে গত ৪ নভেম্বর ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ ঘটনায় ফারদিনের বাবার করা মামলার একমাত্র আসামি বন্ধু আয়াতুল্লাহ বুশরা কারাগারে আছেন।