ঘটনা (এক)
করোনা দেশে আসার আগে একবার জিমে ভর্তি হওয়ার প্ল্যান করেছিলাম। তো গেলাম একদিন আলাপ করতে। কত টাকা দিতে হবে, কয়টা থেকে কয়টা এবং কোন কোন দিন জিম খোলা থাকে এসব আলাপের আগেই আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
– জিমে কি আপনি ভর্তি হতে চাচ্ছেন?
– হ্যাঁ।
পাঞ্জাবি দাড়ি টুপি সব কিছু এনালাইসিস করে আমতা আমতা করে বলে – এখানে তো ছেলে মেয়ে এক সাথে জিম করে, আপনার অসুবিধা হবে না তো? আপনি বরং পাশেরটাতে যান। ওখানে ছেলেদের আলাদা সুযোগ আছে।
কিছুক্ষনের জন্য চুপ হয়ে গেলাম। এরপর এতটুকু বললাম শুধু – মুসলিম তো ভাই সবাই। আমিও আপনিও। যারা জিম করেছে তারাও (সম্ভবত)। আমার লিবাসের কারনে আপনার মনে হল, আমার অসুবিধা হবে, আপনার নিজেরও কি সংকোচ হওয়া উচিত ছিল না। পাশের জিমে ব্যবস্থা থাকলে, আপনার এভাবে এরেঞ্জ করতে কি সমস্যা?
কিছু বলতে চাচ্ছিলেন। সেই সুযোগ না দিয়ে রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই চলে আসলাম…
———————————————
ঘটনা (দুই)
আমাদের মাদ্রাসা যে এপার্টমেন্টে, সেটার টপ ফ্লোরে মেয়েদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছেলেরা গ্রাউণ্ড ফ্লোরে, মেয়েরা টপ ফ্লোরে। তো সে মাদ্রাসায় একজন মহিলা ইংলিশ টিচার নিবে। একজন আসলেন ইন্টারভিউ দিতে। নিকাব হিজাব ছাড়া শুধু সেলোয়ার কামিয পড়ে। পরিক্ষক তার পরীক্ষা নেয়ার আগেই বললেন,
– এখানে তো সবাই হিজাব নিকাব পড়ে আসে, আপনার এভাবে আসতে কি আনইজি লাগবে না?
উনি জবাব দিলেন – হ্যা! তা তো কিছুটা লাগবেই।
———————————————
এই যে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটো ঘটনা, বিরল কিছু কিন্তু নয়। লক্ষ করলে দেখবেন, যেই পোশাকেই আপনি থাকেন না কেন, যেভাবেই আপনি চলাফেরা করেন না কেন, যেই লাইফই লিড করেন না কেন, অস্বস্তি আপনার সবসময়ই থাকবে। বিপরীত দেখলে, বিপরীতের মুখোমুখি হলে।
.
দাড়ি টুপি, হিজাব নিকাব যাদের গায়ে এখনও জড়ায় নি, তাদের কাছে মনে হবে দাড়ি রাখলে চুলকানি হবে, নিকাব পড়লে দম বন্ধ হয়ে যাবে। এই লিবাসের কাউকে দেখলে বিরক্তিও লাগতে পারে। কিন্তু এটাই যখন স্বাভাবিক পোশাকে পরিণত হয়, তখন এর বিপরীতটাই অস্বস্তিকর মনে হয়।
.
তাহলে উত্তম কোনটা বলুন? অস্বস্তিতে যদি ভুগতেই হয়, আল্লাহর রঙে রঙিন হয়ে। ভোগাই কি তাহলে ভাল নয়?
صِبْغَةَ ٱللَّهِۖ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ ٱللَّهِ صِبْغَةًۖ وَنَحْنُ لَهُۥ عَٰبِدُونَ
(আমাদের দ্বীন) আল্লাহর রঙে রঞ্জিত এবং আল্লাহর রঙ অপেক্ষা আর কার রঙ উত্তম হবে? এবং আমরা তাঁরই ‘ইবাদাতকারী। – [সূরা আল বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১৩৮]
মুহতারাম Rizwanul Kabir হাফিযাহুল্লাহর মাস্টারপিস একটা লেখা