জাপানের বিপক্ষে ম্যাচে মাঠে নামার আগে ফটো সেশনে মুখে হাত দিয়ে রেখেছিলেন কেন জার্মান ফুটবলাররা! অভিনব এই ফটোসেশনের উদ্দেশ্যটা-ই বা কি!
কাতারে সমকামিতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিশ্বকাপের আগে এটি নিয়ে ইউরোপের বেশ কয়েকটি এলজিবিটি সংস্থা প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সেই প্রতিবাদে নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, সুইডেন, জার্মানির মতো দেশগুলো এলজিবিটি সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এর প্রতিবাদে ‘ওয়ান লাভ’নামের বিশেষ একটি আর্মব্যান্ড পড়ে খেলতে চেয়েছিল তারা।
কিন্তু ফিফা অনুমতি দেয়নি। উল্টো বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ফিফা সব দলের অধিনায়কের জন্য একটি আর্মব্যান্ড নির্দিষ্ট করে দেয়। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের নির্ধারিত আর্মব্যান্ড পরেই মাঠে নামতে হবে সব দেশের অধিনায়কদের। ফিফা মনে করে, বিশ্বকাপ যে দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সে দেশের আইন ও নিয়মনীতির প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
বিশেষ সেই আর্মব্যান্ড পড়লে হলুদ কার্ডও দেখতে হতে পারে অধিনায়কদের। ফিফার এমন হুমকিতে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছিল ইউরোপের দেশগুলো। ইংল্যান্ড, ওয়েলসের মতো তাদের ম্যাচে দেশগুলো তা মেনেও চলেছে।
জার্মানি আর্মব্যান্ড পড়েনি, তবে তারা প্রতিবাদ ঠিকই করেছে, ভিন্ন এক উপায়ে। জাপান ম্যাচের আগে ফটোসেশনের সময়ে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিল মানুয়েল নয়্যাররা। বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদেই জার্মানি এভাবে প্রতিবাদ করেছে বলে টুইট করে জানিয়েছে জার্মান ফুটবল ফেডারেশন।
টুইটে লেখা হয়েছে, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক অবস্থান না, মানবাধিকার নিয়ে সমঝোতা চলে না। মানুষের সমান অধিকার থাকা উচিত। তবে সেটা এখানে মানা হয়নি। এ কারণেই এই বার্তাটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর্মব্যান্ড পড়তে না দেওয়া মানে কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া।’
এর আগে আজ জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন হেবেসট্রাইট বলেছিলেন ‘ আর্মব্যান্ড পড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
জাপান জার্মান ম্যাচে মাঠে বসেই দেখছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। বিশ্বকাপ শুরুর আগের দিন কাতার বিশ্বকাপের সমালোচকদের একহাত নিয়েছিলেন তিনি। জার্মানির নতুন ধরনের এই প্রতিবাদে ফিফা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।