সেলুলোয়েড কাকে বলে?
সেলুলয়েড এক ধরনের প্লাস্টিক। এদের নাম থার্মোপ্লাস্টিক। সমস্ত প্লাস্টিককেই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, থার্মোপ্লাস্টিক এবং থার্মোসেটিং প্লাস্টিক।
তাপের প্রভাবে এদের আবরণের পার্থক্যের জন্যই এই নাম। থার্মোপ্লাস্টিক বস্তুগুলো তাপের প্রভাবে নরম হয়ে যায় এবং ঠান্ডা হলে শক্ত হয়। যদি এই থার্মোপ্লাস্টিক জিনিসকে আবার তাপ দেওয়া যায় তাহলে সেটা আবারও নরম হবে। এই নরম থার্মোপ্লাস্টিক বস্তুকে প্রয়োজন মাফিক আগের আকার অথবা ইচ্ছেমতো বিভিন্ন আকার দেওয়া যেতে পারে। এখানে বস্তুর ভৌত পরিবর্তন ঘটছে, রাসায়নিক পরিবর্তন নয়।
প্রকৃতিতে অবশ্যই এই ধরনের আরো অনেক বস্তু আছে যারা প্লাস্টিক নয় কিন্তু এরকম আচরণ করে থাকে। যেমন- মোম। (তাপের প্রভাবে থার্মোসেটিং প্লাস্টিকের আচরণ কিন্তু প্লাস্টিকের থেকে আলাদা। তাপ প্রয়োগে প্রথমে নরম হয় তারপর থার্মো প্লাস্টিকের মতোই শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু আবার তাপ প্রয়োগ করে একে আর করা যায় না।)
নাইট্রো সেলুলোজ এবং কর্পূর মিশিয়ে তৈরি হয় সেলুলয়েড। এই সেলুলয়েড তৈরির পিছনে ইতিহাস আছে।
হাতির দাঁত দিয়ে বিলিয়ার্ড খেলার বল তৈরি হয়। এক সময় আমেরিকায় এর আমদানি কমে যাওয়ায় বিলিয়ার্ড বলের ব্যবসায়ীরা পড়লেন মুশকিলে। তখন নিউইয়র্কের একটা ফার্ম ঘোষণা করল, বিলিয়ার্ড খেলার ওই হাতির দাঁতের অনুরূপ বিকল্প কোন রাসায়নিক বস্তু যদি কেউ আবিষ্কার করতে পারে, তবে তাকে বেশ মোটা টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
এই ঘোষণা শুনে জন ওয়েসলি হায়াট এবং তাঁর ভাই কাজে নেমে গেলেন। ওঁরা লক্ষ্য করেছিলেন, কলোডিয়ন গ্রামে এক ধরনের রাসায়নিক বস্তু দেহের কাটা জায়গায় ঢাললে সেখানকার রক্ত তাড়াতাড়ি জমাট বেঁধে যায়।
কলোডিয়ান তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় নাইট্রোসেলুলোজ। হায়াট এর সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে হাতির দাঁতের মতো সাদা জিনিস তৈরি করে ফেললেন। এটাকে সহজেই ছাঁচে ঢালাই করা যায়। এরই নাম সেলুলয়েড।
প্রথম থেকেই সেলুলয়েড দিয়ে সাদা, স্বচ্ছ বা রঙিন বস্তু তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এর সবচাইতে বড় অসুবিধে হলো যে এটা দাহ্য।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।