খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে আছে খুলনা আওয়ামী লীগ। বিএনপির সমাবেশের পর আওয়ামী লীগও বড় আকারে একটি সমাবেশ করবে বলে পরিকল্পনা করছে। আর বিএনপির সমাবেশের আগের দিন সমাবেশ ও মিছিল করবে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে খুলনায় সরকারের উন্নয়ন প্রচারে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই সমাবেশ ও মিছিলে খুলনা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা ছাড়াও সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন। বেলা সাড়ে তিনটায় শিববাড়ী মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে ওই সমাবেশে নেতা-কর্মীরা জড়ো হবেন—এমনটাই পরিকল্পনা দলটির।
খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, বিএনপি যদি কোনো উচ্ছৃঙ্খলতা বা অরাজকতা না করে, তাহলে আওয়ামী লীগ সমাবেশে কোনো বাধা দেবে না। আর সমাবেশে বিএনপির নেতারা যদি আওয়ামী লীগ বা দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কটূক্তি করেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ থেকে তার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। তবে শুক্রবার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত সমাবেশে আসা মিছিল যেন বিএনপির সমাবেশস্থলের পাশ দিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির সমাবেশের সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে খুলনার শীর্ষ নেতারা অবস্থান করবেন। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, মানুষের জানমালের ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন আমরা।
সুজিত অধিকারী, সাধারণ সম্পাদক, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, ‘বিএনপি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ আহ্বান করেছে। এটা প্রতিহত করতে হবে বা বাধা দিতে হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তারা তাদের কথা বলবে, আমরা আমাদের কথা বলব, এর মধ্যে সাধারণ মানুষ বিবেচনা করবে কোনটা সঠিক।’ তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশের পর খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে একটি মহাসমাবেশ করবে। ওই সমাবেশ থেকে বিএনপির কথার জবাব দেওয়া হবে। সবই হবে গণতান্ত্রিক পন্থায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী বলেন, বিএনপির সমাবেশের সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে খুলনার শীর্ষ নেতারা অবস্থান করবেন। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, মানুষের জানমালের ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন তাঁরা।
১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের খুলনা দলীয় কার্যালয়ে এক বিশেষ সভা করে দলটি। সভায় বিএনপির সমাবেশের দিন সহনশীল অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সমাবেশের দিন খুলনার শীর্ষ নেতারা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করবেন।
২২ অক্টোবর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে দলটির পক্ষ থেকে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সমাবেশের অনুমতিও দিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। ওই দিন খুলনা শহরের ডাকবাংলো ও ফেরিঘাট মোড়ের মাঝামাঝি সোনালী ব্যাংক চত্বরে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝেও ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামের সমাবেশের চেয়ে খুলনায় বেশিসংখ্যক মানুষের সমাগম করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।
বিএনপির সমাবেশের দিন ও আগের দিন বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে খুলনা জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশে যাতে বেশি লোকের সমাগম না হতে পারে, সে জন্য ষড়যন্ত্র করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেবেন বলে আশা করছেন তাঁরা। সমাবেশে এক লাখ লোক জমায়েতের পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।