সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আবারও জয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নূরুল হুদা ওরফে মুকুট। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খায়রুল কবিরকে মাত্র আট ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হন। সোমবার বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।
নূরুল হুদা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি মোটরসাইকেল প্রতীকে ৬১২ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী খায়রুল কবির ঘোড়া প্রতীকে ৬০৪ ভোট পেয়েছেন। গত নির্বাচনেও মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন নূরুল। এবার প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।
সোমবার সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত জেলার ১২টি উপজেলার ১২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জেলার ১ হাজার ২২৯ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ২১৮ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে দুটি ভোট বাতিল হয়। এ ছাড়া নির্বাচনে ১২টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ১২ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
সদস্য নির্বাচিত হলেন যাঁরা
নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (ধর্মপাশা উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এর মধ্যে চন্দন খান ২৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এনামুল হক ও ফেরদৌসুর রহমান ২৬ ভোট করে পেয়েছেন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে (মধ্যনগর উপজেলা) দুই প্রার্থীর মধ্যে আবদুস সালাম ২৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পরিতোষ সরকার পেয়েছেন ২৪ ভোট।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে (তাহিরপুর উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন দুজন। তাঁদের মধ্যে মো. মুজিবুর রহমান ৬২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মেহেদী হাসান উজ্জ্বল পেয়েছেন ৩২ ভোট। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে (বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা) তিনজন প্রার্থীর মধ্যে হোসেন আলী ৪১ ভোট পেয়ে পুনরায় জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আখতারুজ্জামান পেয়েছেন ২৩ ভোট। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে (জামালগঞ্জ উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে দিপক তালুকদার ৪৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিসবাহ উদ্দিন পেয়েছেন ২৮ ভোট।
৬ নম্বর ওয়ার্ডে (দিরাই উপজেলা) তিনজন প্রার্থীর মধ্যে রায়হান মিয়া ৭০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমুল হক ৫৩ ভোট পেয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে (শাল্লা উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে টিকেন্দ্র চন্দ্র দাস ২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুস সালাম পেয়েছেন ১৪ ভোট। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে (জগন্নাথপুর উপজেলা) তিনজন প্রার্থীর মধ্যে মাহতাব উল হাসান ৬৭ ভোট পেয়ে পুনরায় জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হারুন মিয়া পেয়েছেন ৪০ ভোট।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে (শান্তিগঞ্জ উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন দুজন। এর মধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান ১০২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রুকুনুজ্জামান পেয়েছেন ৪ ভোট। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে (সদর উপজেলা) দুই প্রার্থীর মধ্যে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব মনির উদ্দিন ৭৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আবদুল কাদির পেয়েছেন ৫৫ ভোট।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে (দোয়ারাবাজার উপজেলা) প্রার্থী ছিলেন দুজন। এর মধ্যে আবদুল খালেক ৭৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রফিকুল হক ৪০ ভোট পেয়েছেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (ছাতক উপজেলা) তিন প্রার্থীর মধ্যে সাহেদ মিয়া ১১৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুস সহিদ পেয়েছেন ৫৩ ভোট।
এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে (ধর্মপাশা, মধ্যনগর, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর) প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এর মধ্যে সেলিনা বেগম ১১১ ভোট পেয়ে পুনরায় সদস্য হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইরিন পেয়েছেন ১০৫ ভোট। ২ নম্বর ওয়ার্ডে (জামালগঞ্জ, দিরাই ও শাল্লা) প্রার্থী ছিলেন তিনজন। এর মধ্যে বীনা জয়নাল ১৪৩ ভোট পেয়ে পুনরায় সদস্য হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুলতানা রাজিয়া পেয়েছেন ৮৫ ভোট।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে (সদর, জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) তিনজন প্রার্থীর মধ্যে ফৌজি আরা বেগম ১৭৪ ভোট পেয়ে পুনরায় সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জুবিলী বেগম পেয়েছেন ১১১ ভোট। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) প্রার্থী ছিলেন দুজন। এর মধ্যে নুরুন্নাহার ১৫৯ ভোট পেয়ে পুনরায় সদস্য হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিনা আক্তার পেয়েছেন ১৪২ ভোট।