বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপির নাকি হাঁটুভাঙা, তাই লাঠি হাতে নিয়েছে। বিএনপিকে লাঠি হাতে নিতে হয় না। বিএনপি জনগণের শক্তির ওপর ভর করে হাঁটে। তোমাদের কোমর ভেঙে গেছে। এ কারণে তোমরা পুলিশ, র্যাব আর গুন্ডাদের নিয়ে চলো।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া চালা এলাকায় বিএনপির প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন যদি হতে হয়, তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হতে হবে। অন্যথায় কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আমরা কারও দয়ায় দেশ পাইনি। আমরা যুদ্ধ করেছি। আমরা যুদ্ধ করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য। সেই দেশটাকে এভাবে কিছুসংখ্যক লুটেরা, দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দিতে পারি না। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন, দিবা স্বপ্ন দেখি আমরা। আব্দুর রাজ্জাক সাহেব বলছেন, বিশ্ব যদি একদিকে যায়, তবু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন হবে না। কেন ভাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে এত ভয় কেন? কারণ আপনারা জানেন, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হলে জীবনেও ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। ৩০টি আসনও পাবেন না।’
আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে নাকি নাশকতা হতে পারে। এখানে নাকি বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। সমস্যা তো করো তোমরা। গত এক বছরে ৯০টি ঘটনা ঘটেছে। মন্দির ভেঙেছে, হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে, বাড়ি দখল করেছে। সবগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজকে তাদের নাকি শান্তি রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আজকে শুধু আমরা নই, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চিৎকার করে বলছে, আওয়ামী লীগের অধীনে তারা নিরাপদ নয়।’
তাজউদ্দীন আহমদের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘যে দল তাদের নেতাদের সম্মান দিতে জানে না, একমাত্র নেতা ছাড়া কোনো নেতা নাই, এক নেতা এক দেশ। এখন এক নেত্রী, আর কেউ নাই। এ কারণেই কাপাসিয়ার একজন মহান নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন—তাজউদ্দীন সাহেব। তাঁকেও তারা স্মরণ করে না।’
বিচারব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এ দেশে কোনো বিচার পাওয়া যায় না। কেউ বিচার পায় না। এখানে বিচারালয় মানে হচ্ছে, আওয়ামী লীগের আখড়া। তারা সব বিরোধী দলকে কীভাবে আন্দোলন থেকে দূরে রাখবে, এই চেষ্টা করছে। আজ প্রশাসনের কাছে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না। পুলিশ আমাদের শত্রু নয়, পুলিশ আমাদের বন্ধু।’
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ মোহাম্মদ রিয়াজুল হান্নানসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।
স্মরণসভার শেষে শাহ মোহাম্মদ রিয়াজুল হান্নানকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য, নির্বাচনের জন্য স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতার আহ্বান জানান।