Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    • Home
    • Rangpur
    • International
    • Islamic
    • Life Style
    • Insurance
    • Health
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    Rangpur

    অনিয়ম দুর্নীতির কারণে অগ্নিকান্ড ঘটে

    নিজস্ব প্রতিবেদকBy নিজস্ব প্রতিবেদকJune 12, 2022Updated:January 25, 2024No Comments9 Mins Read
    ড. মাকসুদ হেলালি

    ড. মাকসুদ হেলালি দেশের বিশিষ্ট অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক। বুয়েট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাডভান্সড মেটেরিয়াল প্রসেসিং সেন্টার থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

    ড. মাকসুদ হেলালি বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড-এর অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ক অন্যতম সম্পাদক এবং অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ-এর অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ক নীতিপ্রণয়ন এবং বিজিএমইএর অগ্নিনিরাপত্তা পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে দেশের ইমারত নির্মাণ ও কলকারখানায় অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলায় ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

    সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে মারাত্মক অগ্নিকান্ডের ঘটনা এবং হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো রাসায়নিক দ্রব্যের অগ্নিনির্বাপণসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে রংপুর ডেইলীর সঙ্গে কথা বলেছেন ড. মাকসুদ হেলালি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সম্পাদকীয় বিভাগের আহমেদ মুনীরুদ্দিন

    রংপুর ডেইলী: আমরা প্রতি বছরই দেশে অনেক অগ্নিকান্ড ঘটতে দেখি। আগুনের ঘটনায় বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে, সম্পদহানি ঘটছে। কিন্তু অগ্নিকান্ড বন্ধ হচ্ছে না। সাম্প্রতিককালে তাজরীন গার্মেন্টস, নিমতলী, চুড়িহাট্টা, সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ আগুনের মতো অনেক অগ্নিকান্ড ঘটেছে। দেশে এত অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ কী বলে মনে করেন?

    ড. মাকসুদ হেলালি : বাংলাদেশে প্রতি বছর যে অগ্নিকান্ড ঘটে তার সংখ্যা ১৫ থেকে ২৫ হাজারের মধ্যে। এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১৯ সালে, ২৬ হাজার। গড়ে প্রতি বছর অগ্নিকান্ডের সংখ্যা ২০ হাজারের মতো। আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর অগ্নিকান্ডের সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় দ্বিগুণ। সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা আরও কম হওয়ার কথা ছিল। মৃত্যুহারের হিসাবেও বাংলাদেশে অগ্নিকান্ডের মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্রে এই হার প্রতি ১০ লাখে ১০ জন এবং বাংলাদেশে ১ জন। রাশিয়ায় প্রতি ১০ লাখে মৃত্যুর হার ৭০ জন এবং ভারতে ১৬ জন। ফলে অগ্নিকান্ডের সংখ্যা ও মৃত্যুর হারের বিবেচনায় বাংলাদেশ যে তুলনামূলকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় আছে এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। অন্যভাবে বললে আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু কলকারখানা, শিল্পউৎপাদন সবখানেই আগুন অপরিহার্য, আগুন ছাড়া আমরা চলতে পারি না। কিন্তু এটাও ঠিক যে, দেশে যে পরিমাণ আগুনের ঘটনা ঘটে তার প্রায় ৬০ ভাগই ঘটে থাকে মানুষের ভুলের কারণে। অসাবধানতা, প্রশিক্ষণের অভাব এবং যথাযথ অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ না করার কারণে।

    রংপুর ডেইলী : আপনি বলছেন যে অগ্নিকান্ডের বিবেচনায় বাংলাদেশ ভালো অবস্থানেই আছে। কিন্তু সামাজিক পরিসর ও জনমনে দেশে অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা যায়। এক্ষেত্রে কি কোনো ভুল ধারণা কাজ করছে বলে মনে করেন?

    ড. মাকসুদ হেলালি : এটা সত্যি যে আমরা এমন একটা ভুল ধারণার প্রচার ও বিস্তার দেখতে পাচ্ছি। যেমন তাজরীন ফ্যাশনস-এ ১১২ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে গার্মেন্টস সেক্টরে এশিয়ার সবচেয়ে বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়। কিন্তু এটা ভুল। পাকিস্তানের করাচিতে গার্মেন্টস কারখানায় আগুনে ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ধরনের ভুল প্রচারণার নানারকম উদ্দেশ্য থাকতে পারে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে অগ্নিকান্ডের অজুহাতে অ্যালায়েন্স অ্যাকর্ডের লোকেরা নানারকম জিনিসপত্র বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। পরিমাণটা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। আমরা বিপদে পড়েছিলাম দেখে সাম্রাজ্যবাদীরা এই সুযোগ নিয়েছে, যেটা তারা সবসময়ই নিয়ে আসছে। অন্যদিকে, দেশে অগ্নিকান্ডের যে বাস্তবতা সেখানে দেখা যায় দেশে অগ্নিকান্ডের বেশিরভাগই ঘটে গৃহস্থালিতে। প্রায় ৬০ ভাগ। রান্নাঘরে চুলার আগুন বা এরকম ছোটখাটো আগুনে। এক্ষেত্রে মৃত্যৃর হারও বেশি। তবে ছোট জায়গায় ছোট ছোট আগুনে একজন বা দুজনের যে মৃত্যু ঘটে তার সংখ্যাও কিন্তু সবমিলিয়ে খুব বেশি না। খেয়াল করুন যে আগে আমরা কাঠের আগুনে রান্না করতাম, এখন করি গ্যাসের চুলা বা এলপিজি ব্যবহার করে। কিন্তু আমরা কখনোই দেশের নারীদের এসব ব্যবহারের জন্য কোনোরকম প্রশিক্ষণ দিইনি, আগুন লাগলে কী করতে হবে সেসব শেখাইনি। এছাড়া দেশে সবচেয়ে বেশি আগুন লাগে বস্তিতে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব ইনটেনশনাল ফায়ার বা ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো আগুন। কিন্তু আমরা ইনটেনশনাল ফায়ার বলি না। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের ফায়ার সার্ভিস জানে না যে কীভাবে পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে যে আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছে কি-না। এটা পরীক্ষা করার কোনো মেকানিজমই ফায়ার সার্ভিসের নেই। পাশাপাশি আমাদের গার্মেন্টস কারখানার আগুনের দুয়েকটাও ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো আগুন মনে হয়েছে আমার কাছে। এক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিতে পারি। এ মুহূর্তে নাম মনে পড়ছে না। সেটা ছিল ইস্পাতের কাঠামোতে তৈরি আটতলা একটা কারখানা ভবন। বিদেশিদের তৈরি। সেখানকার আগুনে কোনো মানুষের মৃত্যু হয়নি। কিন্তু তারা প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ইন্স্যুরেন্স দাবি করেছিল। ওই বীমা কোম্পানির কাছ থেকে ঘটনাটি তদন্ত করে আমি দেখতে পেয়েছিলাম যে, ওই কারখানায় ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়েছিল।

    রংপুর ডেইলী : আপনি ঘরবাড়ির আগুন ও গার্মেন্টস কারখানার আগুনের কথা বললেন। অন্যান্য শিল্পকারখানা বা গুদামের আগুন বিশেষত চুড়িহাট্টা বা নিমতলীর মতো অগ্নিকান্ডে রাসায়নিকের আগুন সম্পর্কে জানতে চাই।

    ড. মাকসুদ হেলালি : নিমতলী ও চুড়িহাট্টার আগুন রাসায়নিকের আগুন। এসব ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত আগুনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বহু মানুষ মারা গেছে, অনেক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চুড়িহাট্টা নিয়ে অনেকগুলো প্রতিবেদন এসেছে। কিন্তু আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে সেটা জানা যায়নি। এখানে খেয়াল করা দরকার আমাদের দেশে যত আগুন লাগে তার বেশিরভাগই, প্রায় ৬০ শতাংশকেই আমরা বলি ইলেক্ট্রিক্যাল ফায়ার। অন্য কোনো দেশে এমন আগুনের হার এত বেশি না। এর একটা কারণ হতে পারে যে, এটা সহজে বলে দেওয়া যায়, সহজে অন্যদিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। ধরে নিই যে চুড়িহাট্টার ঘটনা ইলেক্ট্রিক্যাল ফায়ার। কিন্তু এটা সাধারণ ইলেক্ট্রিক্যাল ফায়ার না, আইইবি’র তদন্ত প্রতিবেদনে এটাকে স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিক্যাল ফায়ার বলা হয়েছে। চুড়িহাট্টায় নানারকম রাসায়নিক দিয়ে পারফিউমসহ অন্য অনেক কিছু বানানো হতো। যেসব ম্যাটেরিয়াল দিয়ে এসব বানানো হতো সেগুলো ইভাপোরেট করে। এখন ইভাপোরেটের ডেনসিটি একটা লেভেলে চলে গেলে রুমের যেকোনো জায়গায় একটা সিগারেটের ছোট্ট আগুন থেকেও সেখানে আগুন লেগে যেতে পারে। অথবা ঘর্ষণজনিত কারণেও স্পার্ক করে আগুন লেগে যেতে পারে। সেখানে একটা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে আগুন অনেক দূর ছড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে গ্যাস সিলিন্ডারসহ নানাকিছুর কথা বলা হয়েছে। সবই ভুয়া। আসলে চুড়িহাট্টায় যে কর্মপরিবেশে যে পদ্ধতিতে এমন সব দাহ্য রাসায়নিক নিয়ে কাজ করা হতো তাতে কোনোরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানা হয়নি, কোনোরকম ফায়ার প্রোটেকশন মেকানিজম ছিল না। জনবসতি এলাকায় এমন কারখানা বা গুদাম করার কোনো বৈধতা থাকতে পারে না। এসব কারণেই এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

    রংপুর ডেইলী : আপনার কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে, এমন সব রাসায়নিক কারখানা, গুদাম বা ডিপো যেভাবে নির্মাণ করা হয়, যেভাবে সেখানে কাজ করা হয় সেখানে বড় ধরনের কাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে, নিয়মকানুন মানায় ঘাটতি ও গাফিলতি রয়েছে। আপনি বিষয়গুলো আরেকটু ব্যাখ্যা করবেন কি?

    ড. মাকসুদ হেলালি : কারখানাই হোক বা অন্য কোনো ভবন, বিল্ডিং নির্মাণের কতগুলো শ্রেণি আছে। গার্মেন্টস কারখানা ‘জি ক্লাস’, এ ধরনের গুদাম বা স্টোরেজ ‘জে ক্লাস’। জে-ক্লাসের মধ্যে যে ধরনের ম্যাটেরিয়াল থাকবে সেগুলোর ইভাপোরেশনের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে এগুলোকে ‘জে-ওয়ান’, ‘জে-টু’ এমন নানা শ্রেণিকরণ করা হয়। বিএনবিসি বা ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে একটা সারণি আছে যেখানে বলা আছে যে, এমন কোনো দালানের পাশে কী থাকতে পারবে আর কী থাকতে পারবে না। এমন কাজ যেখানে হয় তার আশপাশের ভবন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হতে হবে। কিন্তু চুড়িহাট্টায় একটা আবাসিক ভবনের মধ্যে বসে তারা বিপজ্জনক রাসায়নিক নিয়ে কাজ করত। সেজন্য আমরা বরাবরই এমন সব রাসায়নিকের কারখানা-গুদাম এগুলো লোকালয় থেকে সরিয়ে নিতে বলে আসছি।

     

    রংপুর ডেইলী : এমন রাসায়নিক বা নানা ধরনের বিপজ্জনক পণ্য সংরক্ষণ, পরিবহন, গুদামজাত বা স্থানান্তরকরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা প্রণীত ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস বা আইএমডিজি কোড’সহ নানা নিয়মকানুন আছে। বাংলাদেশে এসব কতটা অনুসরণ করা হয় বলে আপনি মনে করেন?

    ড. মাকসুদ হেলালি : এগুলোকে ‘হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়াল’ বা ‘ঐঅতগঅঞ’ বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নয় ধরনের ‘হ্যাজম্যাট’-এর একটা তালিকা ও শ্রেণিকরণ আছে। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডও এমন একটি হ্যাজম্যাট। খেয়াল করতে হবে যে এই নয় শ্রেণির হ্যাজম্যাট কখনোই একটার সঙ্গে আরেকটা রাখা যাবে না। একটার সঙ্গে আরেকটা আলাদাভাবে রাখতে হবে। এবং এমন সবগুলো হ্যাজম্যাটের জন্যই স্টোরেজ, ভেন্টিলেশন, তাপমাত্রা, আলো-বাতাস কোনটার ক্ষেত্রে কী কী সতর্কতা থাকতে হবে সবকিছুর আলাদা আলাদা আইনকানুন আছে, গাইডলাইন আছে। কিন্তু আমরা এমন সব রাসায়নিক ও দাহ্যপদার্থ গুদামজাতকরণ কিংবা পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো কিছুই মানি না। ‘আইএসও’-এর মতো আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ এক্ষেত্রে নিজ নিজ নিয়ম মেনে চলে। কিন্তু আমরা কোনোটাই মানি না। আরেকটা সমস্যা হলো আমদানির ক্ষেত্রে নথিপত্রে একটা লেখা থাকলেও বাস্তবে অন্য পণ্য আমদানি করার মতো ফাঁকিও এখানে নিয়মিতই হয়। এই ধরনের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই নানা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

    রংপুর ডেইলী : সীতাকুন্ডের অগ্নিকান্ডের পর বলা হলো, রাসায়নিক আছে জানলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পানি না দিয়ে ফোম দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতেন। পানি দেওয়ার কারণেই নাকি আগুন আরও ছড়িয়ে পড়েছে। আপনার কাছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড এবং এর আগুন নেভানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাই।

    ড. মাকসুদ হেলালি : হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নিয়ে এখন নানা কথা হচ্ছে। দেখলাম সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টার কারণে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের বিস্ফোরণ হয়েছে। অথচ, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের সেফটি কোডে লেখাই থাকে যে, কখনো আগুন লাগলে এটা পানি দিয়েই নেভাতে হবে, অন্য কিছু নয়। এটাই বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গাইডলাইন। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের হান্ড্রেড পার্সেন্ট কনসেনট্রেশন কখনো ব্যবহার করা হয় না। এসিডের মতো এটা পানি দিয়ে মিশিয়েই ব্যবহার করা হয়। আমরা কিন্তু অনেকভাবেই হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ব্যবহার করি। আপনি ওষুধের দোকান থেকে মাউথ ওয়াশ কিনবেন, সেটা দিয়ে কুলি করবেন জীবাণুনাশক হিসেবে। সেটাতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকে। আমাদের টুথপেস্টে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকে। দাঁত লালচে হয়ে গেলে দাগ লেগে গেলে এর ব্যবহারে দাঁত সাদা হয়। এসব ক্ষেত্রে ১-২ শতাংশের মিশ্রণই যথেষ্ট। এমন নানা কাজে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের নানা মাত্রার কনসেনট্রেশন ব্যবহার করা হয়।

    এখন মনে রাখতে হবে যে, এটার বিভিন্ন মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে রিঅ্যাক্ট করে। ১০ শতাংশের বেশি কনসেনট্রেশন থাকলে সেটা এক রকম, ৩০ শতাংশের বেশি হলে সেটা আরেক রকম। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড যদি ৬০ শতাংশের বেশি কনসেনট্রেশন থাকে তাহলে সেটা হয়ে যায় উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ক্ষমতাসম্পন্ন। সীতাকুন্ডের কনটেইনার ডিপোতে যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল সেগুলো ৬০ শতাংশ কনসেনট্রেশনের। অর্থাৎ উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ক্ষমতাসম্পন্ন। কিন্তু এমন হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডেও যখন পানি দেওয়া হয় তখন সেটার সলিবিলিটি কমে যায় বা এটা নন-রিঅ্যাকটিভ হয়ে যায়। আপনি এমন ক্ষেত্রে যত বেশি পানি দেবেন এটা তত নন-রিঅ্যাকটিভ হয়ে যাবে বা এর বিস্ফোরক সক্ষমতা নষ্ট হবে।

    হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কনটেইনারে রাখার তিনটি আবশ্যিক শর্ত আছে। ইট শুড বি কুল, ইট শুড বি ড্রাই, ইট শুড বি ভেন্টিলেটেড। অর্থাৎ এটা ঠান্ডা রাখতে হবে, শুকনো রাখতে হবে এবং বাতাসের প্রবাহ থাকতে হবে। ৬০ শতাংশের বেশি কনসেনট্রেশনে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কখনোই বদ্ধ জায়গায় রাখা যাবে না। কিন্তু সীতাকুন্ডে এগুলো বদ্ধ কনটেইনারে রাখা ছিল। আমরা জেনেছি, ডিপোতে রাত ৯টার দিকে একটা আগুন লেগেছিল। সেটা কীভাবে তা আমরা জানি না। আগুন লাগার পর তার উত্তাপে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাখা কনটেইনারগুলো ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কারণ কনটেইনারগুলো মেটালিক। এটাই ছিল মারাত্মক বিপজ্জনক। কারণ আগুন লাগলে তার রেডিয়েশন হরাইজন্টালি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবে উত্তাপ বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে রাত ১১টায় ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখন শুরুর দিকে যে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পানি ছিটিয়ে সেসব ঠান্ডা করার চেষ্টা করেছিলেন তারা যথাযথ কাজটিই করেছিলেন।

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    • Website

    নিজস্ব প্রতিবেদক বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে পাঠকের কাছে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছে দেয়। তারা ঘটনার প্রকৃত তথ্য ও বিশ্লেষণ তুলে ধরে যাতে পাঠক বিস্তৃত ও স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারেন। নিজস্ব প্রতিবেদকদের লক্ষ্য হলো দ্রুত এবং নিখুঁত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাজে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

    Related Posts

    The War of Liberation: Key Battles That Shaped Bangladesh’s Independence

    November 20, 2024

    Bangladesh: A Nation Built on Resilience and Courage

    November 20, 2024

    The Role of the British Empire in Shaping Bangladesh’s Colonial Legacy

    November 20, 2024
    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক
    • সুস্থ যৌনজীবনের জন্য জরুরি ১০টি পরামর্শ
    • গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর যত্নের সম্পূর্ণ গাইড
    • ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার কৌশল
    • ডিপ্রেশন মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সমাধান
    • ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা
    • শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার উপায়
    • শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস
    • গরমে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় ও বর্জনীয়
    • শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব
    • মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকার কৌশল
    • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
    • চোখের সুস্থতা বজায় রাখার ঘরোয়া টিপস
    • হার্টের যত্নে কোন খাবার বেশি খাবেন
    • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি
    • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়
    • প্রেমে একে অপরকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব
    • দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন করে সাজানোর কৌশল
    • প্রেমে আস্থা নষ্ট হলে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন
    • সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলেশনশিপ পরিচালনার টিপস
    • প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে রাগ কমানোর ৫টি পদ্ধতি
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.