কৃষি-ফসলের ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেচের আওতায় কৃষি-জমির পরিমাণ প্রতিবছর বাড়ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেচের আওতায় মোট কৃষি-জমির পরিমাণ ছিল ৫৪ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর। ৫ বছরের ব্যবধানে ২০২০-২১ অর্থবছরে এসে সেচের আওতায় জমির পরিমাণ আরো ২ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর বেড়ে ৫৬ লাখ ৫৪ হাজার হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। আর চলতি ২০২১-’২২ অর্থবছরে সেচের আওতাধীন এলাকার জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর।
অর্থ বিভাগ থেকে ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষায়’ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
অপরদিকে পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশের ভূগর্ভস্থ এবং ভূ-উপরিস্থ পানির সুসমন্বিত ও সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, ফসল উৎপাদনে নিবিড়তা, বহুমুখীকরণ এবং ফলন বাড়ানোর সরকারি প্রচেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। শুধু তাই নয়, ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানোর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সেচ-কাজের ব্যয় সরকারিভাবে কমানোর ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সমীক্ষায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে বাস্তবায়িত ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়নে ‘জরিপ ও পরিবীক্ষণ প্রকল্পের’ মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২০১টি অটো ওয়াটার লেভেল রেকর্ডার স্থাপন করা হয়েছে।
এসব অটো ওয়াটার রেকর্ডারের মাধ্যমে একদিকে যেমন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটা সংগ্রহ হচ্ছে অন্যদিকে ডিজিটাল ডাটা ব্যাংক প্রস্তুত করার মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করাও সম্ভব হচ্ছে। এ তথ্য ব্যবহার করে ইতোমধ্যে ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে এবং তা সময়ে-সময়ে হালনাগাদ করা হচ্ছে।
এ ম্যাপের মাধ্যমে দেশের কোথায় কখন কোন ধরনের সেচযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে, তা সহজেই নিরুপণ করা সম্ভব হবে বলে অর্থনৈতিক সমীক্ষায় উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়াও, স্মার্ট কার্ড এবং প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কারণে সেচ-চার্জ আদায় সহজতর হয়েছে এবং কৃষকরা চাষাবাদকৃত ফসলে সঠিক সময়ে ও পরিমাণ মতো সেচ দিতে সামর্থ হচ্ছে।