আইনের দৃষ্টিতে পলাতক কোনো আসামির পক্ষে কোনো আবেদন না করতে আইনজীবীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। নির্দেশ অমান্যকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ ও সতর্কবার্তা দেন।
দুদকের একটি মামলায় পলাতক এক আসামির পক্ষে এদিন সকালে একটি জামিনের আবেদন করা হয়।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যেসব আসামি প্রসিডিংসের বাইরে রয়েছেন, পলাতক আছেন তাদের পক্ষে কেউ কোনো আবেদন করবেন না। যদি তা করেন তাহলে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল ইস্যু করব।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতির আবেদন) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত বৃহস্পতিবার।
রায়ে জোবাইদাকে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক উল্লেখ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেন, এ ধরনের ব্যক্তির আইনি প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ নেই। হাইকোর্টে তার (জোবাইদা) মামলা গ্রহণ আইনসিদ্ধ হয়নি।
এদিকে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় রুলে আইনজীবীরা শুনানি করতে পারবেন কি না, এ নিয়ে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অপরপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। আংশিক শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন ধার্য করে।
অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘পলাতক আইনজীবীদের পক্ষে কোনো আবেদন না করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের বক্তব্যের অর্থ এই দাঁড়ায় যে, যদি কোনো আইনজীবী কারও পক্ষে কোনো আবেদন করেন তাহলে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে ওই আসামি পলাতক নন। এর ব্যত্যয় হলে আদালত অবমাননার রুল ইস্যু করা হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।’
প্রসঙ্গত, বিগত ওয়ান ইলেভেনের পটভূমিতে তারেক রহমান গ্রেপ্তারের পর ২০০৮ সালে কারামুক্তি পান। এরপর পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে জোবাইদা স্বামীর সঙ্গে সেখানেই রয়েছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান দুর্নীতির একাধিক মামলাতেও দণ্ডিত।