বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি গত মে মাসে বায়ুমণ্ডলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা শিল্পবিপ্লবের আগের সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি। খবর এনডিটিভির
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের মোওনা লোয়া আগ্নেয় পাহাড়ের চূড়ায় এনওএএর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থান। গত শুক্রবার সংস্থাটির আবহাওয়াবিদেরা জানান, চলতি বছরের মে মাসে এই কেন্দ্র থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ৪২১ পিপিএম। শিল্পবিপ্লব-পরবর্তী যুগে এটাই সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টন কার্বন নির্গমন হয়েছে। মানবেতিহাসে এক বছরে এটাই সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনের হার।
রেকর্ড সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণের পেছনে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন খাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মতে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের পেছনে দায়ী দেশে দেশে সক্রিয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, অটোমোবাইল কারখানা, কৃষি খামার ইত্যাদি।
বায়ুমণ্ডলে বাড়তি কার্বন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতির ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দ্রুত বাড়ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই উষ্ণ আবহাওয়া দেশে দেশে অধিক বন্যা, ঝড়, দাবানলসহ বিভিন্ন দুর্যোগের জন্য দায়ী। ইতিমধ্যে এসব দুর্যোগ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
এনওএএর প্রশাসক রিক স্পিনরাড বলেন, ‘মানুষ আমাদের জলবায়ুকে এমনভাবে পরিবর্তন করে ফেলেছে যে এখন আমাদের অর্থনীতি ও অবকাঠামোকে সেটার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করতে হচ্ছে। প্রতিদিনই আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছি। বিশ্বে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের সর্বোচ্চ মাত্রা এটাই স্পষ্ট করে যে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। না হলে বিপর্যয় এড়ানো যাবে না।’