বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান পলাতক বলে রায়ে উল্লেখ করেছে আপিল বিভাগ।
বুধবার রায়ের বিষয়টি জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। দুদকের এক মামলা বাতিল চেয়ে জোবায়দা রহমানের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে গত ১৩ এপ্রিল এ রায় দেয় আপিল বিভাগ।
১৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়েছে জানিয়ে খুরশীদ আলম খান বলেন, জোবায়দা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক বলে রায়ে এসেছে। হাইকোর্টে যখন তিনি হলফনামা করে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন, তখন পলাতক ছিলেন। ওই মামলা আমলে নেয়ার আগে হাইকোর্টে শুনানি করা ঠিক হয়নি। কারণ, এটি একটি স্বতঃসিদ্ধ নীতি যে পলাতক আসামি কখনো কোনো আবেদন বা মামলা যে কোনো আদালতে করতে পারেন না। এটাই এ রায়ের মোদ্দাকথা। তাকে আদালতের আওতায় এসে, অর্থাৎ আত্মসমর্পণ করে তারপর প্রার্থনা জানাতে হয়। আত্মসমর্পণ না করে হাইকোর্টে জোবায়দা রহমানের আবেদন করা আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ।’
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আরও বলেন, আপিল বিভাগ এ-ও বলেছেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, জোবায়দা রহমানকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের দায়িত্ব ছিল এ বিষয়গুলো খেয়াল করা, অথচ তা খেয়াল করেননি। মামলা আমলে নেয়ার পরে জোবায়দা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা-সংক্রান্ত প্যারাটি বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
জোবায়দা রহমানের অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে জোবায়দা রহমানকে পলাতক বলা হয়নি। তবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো হাতে পাইনি। পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর এ বিষয়ে বলা যেতে পারে।’
জানা গেছে, সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে মামলা বাতিল চেয়ে জোবায়দা হাইকোর্টে আবেদন করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জোবায়দার আবেদন খারিজ করে তাকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিলটি করেন জোবায়দা।