পদ্মা সেতুর ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের আবারও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নেই।’
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ‘খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে’ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ভাবতেও পারি না, একটি দেশে জোর করে যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁর মুখ থেকে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন, এই ধরনের সন্ত্রাসী বক্তব্য কী করে আসে। কোনো সভ্য দেশের মানুষ এটা কখনো সহ্য করতে পারে না। সব দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে। কোনো সভ্য সমাজে, কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে এই ভাষা ব্যবহার করা যায় না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতার দিন শেষ উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দুর্বল হয়ে গেছেন। তিনি দেখতে পাচ্ছেন এখন আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের পৈতৃক সম্পত্তি নয় বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘জনগণের পকেটের টাকা থেকে যে ট্যাক্স কেটে নিয়েছেন, সেই ট্যাক্সের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। এবং এখানে আপনারা যে দুর্নীতি করেছেন, সব দুর্নীতির সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জনগণ জানতে চায়, পদ্মা সেতুর অর্থের জন্য তাঁদের কাছ থেকে কত টাকা কেটেছেন। কত টাকা পদ্মা সেতুতে ব্যয় করেছেন আর কত টাকা নিজের পকেটে ভরিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ ‘উন্নয়ন উন্নয়ন’ বলে চিৎকার করলেও জনগণের উন্নয়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কার উন্নয়ন করেছেন? উন্নয়ন করেছেন পি কে হালদারের, উন্নয়ন করেছেন আপনাদের শিক্ষামন্ত্রীর ভাইয়ের। উন্নয়ন করেছেন ফরিদপুরের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ও তাঁর ভাইয়ের এবং উন্নয়ন করেছেন আপনাদের নিজেদের। প্রত্যেকে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন এবং এই দেশকে একটা লুটপাটের রাজত্বে পরিণত করেছেন। জনগণের কোনো উন্নয়ন হয় নাই।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের চাপের সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছে। কৃষক, শ্রমিক, মজুর যাঁরা দিন আনে দিন খান, তাঁরা আজকে হিমশিম খাচ্ছেন না শুধু, তাঁদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাঁরা জীবন যাপন করতে পারছেন না।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যন্ত সচেতন ও পরিকল্পিতভাবে দেশের সব অর্জনকে নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের সুস্থভাবে জীবন যাপন করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মেয়েদের লেখাপড়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। স্বাস্থ্যের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে মানুষ ভোট দিতে পারে না ভোট দিতে চায় বলে আগের রাতে ভোট হয়ে গেছে।
সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়নাল আবেদিন ফারুক, খাইরুল কবির খোকন প্রমুখ।