গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেছেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বেইজ্জতি করেছে সরকার। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি এবং বিরোধী রাজনীতিকদের ওপর হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন পেশাজীবী অধিকার পরিষদ। এই সমাবেশে নুরুল হক আরও বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তাভাবনার সঙ্গে আপনার আমার পার্থক্য থাকতে পারে। তাঁর অনেক কাজের পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। অথচ এই সরকার কীভাবে তাঁকে বেইজ্জতি করেছে। বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ব দেখেছে এই সরকারের সংকীর্ণতা।’ এ ছাড়া পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা অসহিষ্ণু বক্তব্য সমগ্র জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, ‘পরের জন্য কুয়া করলে সেখানে নিজেকেই পড়তে হয়। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি তছনছ হয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানে কী হয়েছে, দেখেছেন? এখন তাদের (আওয়ামী লীগ) মধ্যে ওই আতঙ্ক। আপনি–আমি কিছু না বললেও তারা ঘুমের ঘোরে দেখতে পাচ্ছে, তাদের পরিণতি ওই রকম হচ্ছে কি না। আমার মনে হয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী হয়তো অসতর্কতায় বা অবচেতন মনে সেই কথা বলে ফেলেছেন টেনশন থেকে।’ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের সরকার খেপিয়ে তুলে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে চায়, কখনো আক্রমণ করে ঝাল মেটাতে চায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নুরুল হক দাবি করেন, ‘সিলেটের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে লং মার্চ করায় এবং ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার কারণে তাঁকে গুম করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদেরকেও ভয়ভীতি দেখানো হয়। নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’
নুরুল হক বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেখেছেন ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। শুনতে পাচ্ছি, এনআরসিতে যাঁরা নাগরিকত্ববঞ্চিত হয়েছেন, তার একটি অংশকে বাংলাদেশে ঢোকানোর পাঁয়তারা চলছে। এই সরকার এমন একটি জায়গায় আছে, তারা প্রতিবাদ করতে পারবে না। তারা দিল্লির কাছে ধরা।’
সমাবেশ থেকে বলা হয়, শেরপুরের পেশাজীবী অধিকার পরিষদের নেতা শহিদুল ইসলাম, বরিশালের দুই নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের ৯ ছাত্র ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নির্যাতন ও হেনস্তার শিকার হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, ছাত্রলীগের অধিকাংশই অছাত্র, অধিকাংশই মাদকাসক্ত। নিজেদের অন্তর্কোন্দলে গত ১০ বছরে অর্ধশতাধিক ছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
নুরুল হক বলেন, ‘গত ১১ বছরে এই সরকার প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। সরকার যা উন্নয়ন করছে, তার প্রায় চার গুণের মতো টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সরকারকে হিসাব দিতে হবে, ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুর ব্যয় কীভাবে ৪০ হাজার কোটি টাকায় যায়। এই চোরদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’