আমরা স্বপ্ন দেখি কেন?
আমরা সকলেই অল্পবিস্তর স্বপ্ন দেখে থাকি। কিন্তু স্বপ্ন দেখার কারণটা কী?
শারীরবিজ্ঞানীরা ঘুমকে দু’টো পর্যায়ে ভাগ করে থাকেন-
একটা হলো Rapid Eye Movement বা REM পর্যায়। ঘুমের এই অবস্থায় চোখের তারা দ্রুত নড়াচড়া করে।
দ্বিতীয় পর্যায়টির নাম হলো No Rapid Eye Movement- সংক্ষেপে NRE: ঘুমের এই অবস্থায় চোখের তারা থাকে স্থির।
এই দু’টো পর্যায়ের REM ঘুমের সময়ই আমরা সাধারণত স্বপ্ন দেখে থাকি।
মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেছিলেন-
আমাদের চেতন মনের গভীরে আছে একটা অবচেতন মন। আমরা যখন জেগে থাকু তখন আমাদের ভাবনা, চিন্তা, আবেগ, অনুভূতি থাকে চেতন মনের নিয়ন্ত্রণে। যেই আমরা ঘুমিয়ে পড়ি, অমনি আমাদের অবচেতন মনের অতৃপ্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্নের রূপ ধরে মনের চেতন স্তরে উঠে আাসে এবং পরিতৃপ্তির রাস্তা খোঁজে।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক-
একটি ছেলে একঘর সহপাঠীর সামনে কারো কাছে অপমানিত হলো। হয়তো ছেলেটি শারীরিক বা আর্থিক ভাবে দূর্বল হওয়ার দরুন সেই মুহুর্তে অপমানের প্রতিশোধ নিতে অক্ষম। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে ছেলেটি তার অপমানের কথা ভুলে গেলেও তার অবচেতন মনে অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার আকাঙ্খা রয়ে যেতে পারে। রাত্রে সে হয়তো স্বপ্ন দেখবে-
যে ছেলেটি তাকে অপমান করেছিল তাকে যেন সবাই মিলে মারছে কিংবা সে ছেলেটির বিরাট কোনো ক্ষতি হয়েছে। অনেক সময় ছেলেটিকে সরাসরি না দেখে তার মত চেহারার কাউকেও স্বপ্নে দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রেও অবচেতন মনের আকাঙ্খা তৃপ্ত হচ্ছে আংশিক ভাবে।
আর এক ধরনের স্বপ্ন লোকে প্রায়ই দেখে, যেগুলোকে বলা হয় ভয় বা উদ্বেগের স্বপ্ন। যেমন-
আমাদের কারো প্রিয়জন হয়তো খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, ডাক্তারও বিশেষ ভরশা দিতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে আমরা হয়তো স্বপ্ন দেখবো, পাহাড়-চূড়ো অথবা উঁচু বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে যেন গড়িয়ে পড়ছি। প্রিয়জনকে ঘিরে উদ্বেগের কারণেই এ-জাতীয় স্বপ্ন আমরা দেখি।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।