বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়ার ঘটনা অতীতে ঘটলেও এখনকার বাংলাদেশে সেটা আর পারবে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শনিবার (০৭ মে) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
একটা মহল ক্ষমতায় যেতে বিদেশিদের কাছে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যত বদনাম দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে বলে বেড়ায়। তাদের আকাঙ্খা বিদেশ থেকে কেউ এসে কোলে করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। তবে এখনকার বাংলাদেশে সেটা আর পারবে না। ’
তিনি বলেন, ‘এইটুকু বলতে পারি- যদি আমাদের সংগঠন শক্তিশালী থাকে, মানুষের আস্থা বিশ্বাস আমাদের ওপর আছে, সেটা ধরে রেখে যদি আমরা এগিয়ে যেতে পারি, তবে দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। ’
সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে দলের সভাপতি বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এটা হচ্ছে বড় কথা। সংগঠনে নেতৃত্বে তাদেরই আপনারা বেছে দেবেন যাদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা থাকবে, বিশ্বাস থাকবে। এই কথাটা মনে রাখতে হবে। কারণ আমরা জনগণকে বিশ্বাস করি, জনগণের ওপর আস্থা রাখি। আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েই কিন্তু বার বার ক্ষমতায় এসেছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে। বার বার বাংলাদেশে অনেক ধাক্কা গেছে। এই প্রথম আমরা ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে পেরেছি বলেই দেশের আর্ত-সামাজিক উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে। এটা হলো বাস্তবতা। এর মধ্যে অনেক বার চেষ্টা হয়েছে, নির্বাচনের আগেও নানা খেলা খেলার চেষ্টা, নির্বাচনের পরেও। কিন্তু জনগণের সাড়া পায়নি। জনগণ যেহেতু আমাদের সাথে আছে তাই কেউ কিছু করতে পারেনি। কাজেই সেই জনগণকে আমরা সব সময় গুরুত্ব দেই। তাদের কল্যাণ করাটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের জন্য কাজ করে, এটা প্রমাণিত সত্য। এই আওয়ামী লীগ জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। আবার আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল। আজকে জাতির পিতার স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করা দেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে পেরেছি। আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। ’
তিনি বলেন, ‘এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন- জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া। ক্ষমতা জনগণের কাছে ছিল না। ক্ষমতা ছিল ক্যান্টনমেন্টে বন্দি। সেখান থেকে তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মিলিটারি ডিকটেটরশিপ চালিয়েছিল। যেটা আইয়ুব খান করেছিলেন। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় যেতে চান কিন্তু জনগণের ভোট চাইতে পারেন না, তারা চাইবে এদেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করতে। তারাই চাইবে এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে। কারণ সামরিক জান্তার পকেট থেকে ক্ষমতায় বসে যেসব দল গঠন হয় তারা আর যাই হোক গণতন্ত্র দিতে পারে না, গণতন্ত্র চর্চাও করতে পারে না। গণতন্ত্র তারা বোঝেও না। ’
তিনি বলেন, ‘তারা মানুষ খুন করতে পারে। আইভী রহমানকে খুন করেছে, আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাদের কুকর্মগুলো আবার মানুষের সামনে তুলে ধরা দরকার। মানুষকে আবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার। ’