আব্বু বললো, “তুমি বসো তো মা। এদের কারো কথারই উত্তর দিতে হবে না, তুমি খেতে বসো।”
আমি একটা চেয়ার টেনে নিয়ে আয়ানের পাশেই টুপ করে বসে পড়লাম। কেউ আর কোনো প্রশ্ন করলো না। সবাই অন্য টপিক নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে। আমার একটু খেয়েই পেট মুচড়ে উঠল। বমি বমি ভাব হচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তেই বমি করে ফেলতে পারি। না পারছি চলে যেতে আবার না পারছি এখানে থাকতে। কেমন একটা অস্বস্তি লাগছে।
চট করে লেবুর রস খেয়ে নিলাম। আগেই বলেছি যে, আয়ান আমাকে খুব ভাল বুঝতে পারে। এবারও তাকে কিছু বলার আগেই সে বুঝে ফেললো। একটু হেলে গলা নামিয়ে আমার কানে কানে বললো, ” আয়রা, তোমার অসুবিধে হচ্ছে কিছু? বমি পাচ্ছে?” আমি শুধু সম্মতি জানাতে মাথা নাড়ালাম।
ব্যাস, কেল্লাফতে! আয়ান খাওয়া ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। সবার চোখ তার দিকে। আমিও একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম। সবার উদ্দেশ্যে সে
বললো, “এক্সকিউজ মী, আমি একটু আসছি ভিতর থেকে। আপনারা দুঃশ্চিন্তা করবেন না। খেয়ে নিন। আর আয়রা তুমি একটু আমার সাথে আসবে?”
কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আমি উঠে দাঁড়ালাম। তখনও আমি কিছু বুঝিনি, কি করছে সে। আমিও তাকে অনুসরণ করে তার পিছু পিছু অন্দরমহলে প্রবেশ করলাম।
ওকে কিছু জিজ্ঞেস করবার আগেই আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গলগল করে বমি করে ফেললাম। মাথা ঘুরতেছিল। পড়ে যাচ্ছি পড়ে যাচ্ছি মনে হওয়ার সাথে সাথেই আমি শক্ত করে বেসিন আঁকড়ে ধরলাম। কিন্তু তাতেও টাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে পড়ার আগেই আয়ান এসে আমাকে ধরল।
আয়ান উৎকণ্ঠিত হয়ে আমাকে বলছে
-এই তুমি ঠিক আছো, আয়রা?
:তুমি আমাকে ধরে একটু বিছানা পর্যন্ত নিয়ে যাও। আমি একটু শুয়ে থাকবো।
সে তাই করলো। আমার পাশে বসে টিস্যু দিয়ে আমার মুখ মুছে দিয়ে বললো,
-একটু পানি খাবে?
:হুম, অল্প।
দৌড়ে গিয়ে সে এক গ্লাস পানি নিয়ে এলো। আমি খানিকটা খেয়ে পাশ ফিরে শুইলাম। চোখ বন্ধ করে মিনিট পাঁচেক থাকার পর বেশ ভালো বোধ করতে লাগলাম।
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya