অহেতুক আন্দোলন, গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানের কথা না বলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, নির্বাচনে এলে সংসদে একটি সম্মানজনক অবস্থা বিএনপির থাকবে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কামরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সাংসদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজক ‘শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদ’।
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির প্রতি বিনীতভাবে আহ্বান জানাব, অহেতুক আন্দোলনের কথা না বলে, গণ-আন্দোলনের কথা না বলে, গণ-অভ্যুত্থানের কথা না বলে, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। গণ-অভ্যুত্থান ও গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করার জন্য যতই ঐক্য করেন না কেন, কোনো লাভ নেই। জিরো প্লাস জিরো ইকুয়াল টু জিরো। কোনো সংখ্যা হয় না, শূন্যই হয়।’
বিএনপির উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘খুচরা দল নিয়ে যতই ঐক্য গড়ে তুলুন, কোনো লাভ হবে না। আন্দোলন করার মতো আপনাদের নিজস্ব সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। এসব দলকে নিয়ে আন্দোলন করার হুমকি দিয়েও কোনো লাভ নেই।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বিএনপির উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। তামাশা করার জন্য না এসে সত্যিকার অর্থে যদি মনে করেন, তাহলে নির্বাচনে আসবেন। সংসদে একটি সম্মানজনক অবস্থা আপনাদের থাকবে, এটি আমরা বিশ্বাস করি।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটা বিরোধী দল চাই। শক্তিশালী বিরোধী দল আমরা চাই। সেই বিরোধী দল হিসেবে আপনারা (বিএনপি) আবির্ভূত হন, এই কামনা আমরা করি। তবে আপনাদের কার্যকলাপে আপনারা সত্যিকার অর্থে কোনো বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবেন না, এটি আমরা বুঝতে পারি।’
শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে অভিযোগ করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সার্চ কমিটির মাধ্যমে সুন্দর একটি নির্বাচন কমিশন আমার পেয়েছি। ২০২৩ সালের শেষ দিকে বা ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে যে নির্বাচন হবে, কমিশন একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে আশা করছি।’
নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটার সুযোগ নেই।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ভবিষ্যতে নির্বাচনে বিএনপি আসবেন না বলে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার চেষ্টা করছে। এগুলো বায়বীয় কথাবার্তা। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে। কিন্তু মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। অহেতুক একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
আহসান উল্লাহ মাস্টারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যে অপশক্তি তাঁকে হত্যা করেছে, তারা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের দেশ হিসেবে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। হত্যা ও ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাদের রাজনীতি শুরু হয়েছিল, তারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হিসেবে দেশটাকে আবার গ্রাস করার ষড়যন্ত্র করছে।’
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি আবদুল বাতেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. গনি মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।