তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বেসরকারি খাতে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এক হাজার ৪৩৯ টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার ৩৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিইআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। নতুন এ দাম সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এলপিজি গ্যাসে কেজিপ্রতি ১১ টাকা ৯২ পয়সা কমেছে। বেসরকারি পর্যায়ে মে মাসের জন্য এলপিজি মূসকসহ কেজিপ্রতি ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে কমিয়ে ১১১ টাকা ২৬ পয়সা করা হয়েছে। সে হিসাবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ১ হাজার ৩৩৫ টাকা। ফলে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে গ্রাহকের ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজিতে ১০৪ টাকা কম লাগবে।
ঘোষণা অনুযায়ী, মোটরগাড়ির জন্য অটো গ্যাসের দামও বর্তমানে মূসকসহ প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ০২ পয়সা থেকে কমিয়ে ৬২ টাকা ২১ পয়সা করা হয়েছে।
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তি মূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সৌদি সিপি অনুসারে মে মাসে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে টনপ্রতি ৮৫০ ও ৮৬০ ডলার, মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় এপ্রিলের জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতি কেজি এলপিজির সর্বোচ্চ মূল্য ১১১ টাকা ২৬ পয়সা ধরে মে মাসে সাড়ে পাঁচ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৬১২ টাকা, ১২ কেজির দাম এক হাজার ৩৩৫ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির দাম এক হাজার ৩৯১ টাকা, ১৫ কেজির দাম এক হাজার ৬৬৯ টাকা, ১৬ কেজির দাম এক হাজার ৭৮০ টাকা, ১৮ কেজির দাম দুই হাজার ৩ টাকা, ২০ কেজির দাম দুই হাজার ২২৬ টাকা, ২২ কেজির দাম দুই হাজার ৪৪৮ টাকা, ২৫ কেজির দাম দুই হাজার ৭৮১ টাকা, ৩০ কেজির দাম তিন হাজার ৩৩৮ টাকা, ৩৩ কেজির দাম তিন হাজার ৬৭২ টাকা, ৩৫ কেজির দাম তিন হাজার ৮৯৪ টাকা এবং ৪৫ কেজির দাম পাঁচ হাজার ৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয়ের পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির উৎপাদিত এলপিজির দাম পরিবর্তন করা হয়নি।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল এলপিজির দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। সে সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এক হাজার ৩৯১ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৪৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলপিজি দাম সমন্বয় করা হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম মানেন না ব্যবসায়ীরা। খুচরা পর্যায়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড়শ থেকে ২০০ বেশি দামে বিক্রি হয় এলপিজি সিলিন্ডার। ফলে এলপিজি ব্যবহারে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তা আর মুনাফা লুটছে কোম্পানি, ডিলার আর খুচরা ব্যবসায়ীরা।