এবার ঈদের ও সাপ্তাহিক টানা ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশা করছে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সেজন্য চাপ মোকবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা শহরের অধিকাংশ আবাসিক হোটেল-মোটেল ও সাজেকের রিসোর্ট-কটেজেগুলোতে ইতিমধ্যেই আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন পর্যটকরা। তুলনামূলক ভালো হোটেলগুলোতে কোনো কক্ষ খালি নেই। গত ২০ থেকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে এসব হোটেল-রিসোর্ট বুকিং হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে ঈদের ছুটি উপলক্ষে সব রিসোর্ট-কটেজের আগাম বুকিং হয়ে গেছে। সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, ৫, ৬ ও ৭ মের জন্য রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের ১৩০টির মতো রিসোর্ট-কটেজের সব কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে। তবে ঈদের আগের দিনগুলোর জন্য বুকিং হয়েছে ৫০ শতাংশ কক্ষ। সাজেকে এসব রিসোর্ট-কটেজে দৈনিক সাড়ে তিন হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বাড়ি ও তাবুতে বেশ কিছু পর্যটক রাত্রি যাপন করেন।
পর্যটনসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনিন্দ্য সুন্দর রাঙামাটি শহরে বেশ কয়েক বছর ধরে পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে। ২০১৭ সালে ভয়াবহ পাহাড়ধস ও পরবর্তী সময়ে দুই বছর করোনার কারণে পর্যটনের ব্যবসায় ধস নামে। ফাঁকে ফাঁকে কিছু পর্যটক আসলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেননি পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এবার টানা ঈদ ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামার আশায় কিছু ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে জানান এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরে ৫৫টি আবাসিক হোটেল-মোটেল আছে। গত ২০ থেকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এর মধ্যে ভালো মানের হোটেল-কটেজগুলোতে কোনো কক্ষ খালি নেই। এসব হোটেল-মোটেলে দৈনিক পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ থাকতে পারবেন।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক টানা ছুটিতে জেলার হোটেলগুলোর ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। এ বছর এত মানুষ আগাম কক্ষ বুকিং নেবেন সেটি তাঁরাও আশা করেননি। পাহাড়ধসের পর থেকে লোকসান কিছু পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদুল ফিতর ছুটিতে বেশি কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। আমাদেরও ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।’
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরি লুসাই বলেন, ঈদের ছুটি উপলক্ষে তাঁদের রিসোর্ট-কটেজের টানা তিন দিন সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ৫, ৬ ও ৭ মে রিসোর্ট-কটেজগুলোতে কোনো কক্ষ খালি নেই।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ঈদের ছুটি উপলক্ষে রাঙামাটিতে আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোর প্রায় সব কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। তাঁরা আশা করছেন এবার ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে। সেজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহরের বিভিন্ন স্থান ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।