ঈদের আগে সাপ্তাহিক ছুটির দ্বিতীয় দিনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল সদরঘাটে। সব গন্তব্যের লঞ্চগুলোই যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। তারপরও আশানুরূপ যাত্রী না হওয়ার অজুহাতে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বরিশালের কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। তবে রাত ৯টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে কালবৈশাখীর আশঙ্কার কথা বলা হলেও এর মধ্যেই সদরঘাট ছেড়ে গেছে সব লঞ্চ। ঝড় শুরু হলে লঞ্চকে নিরাপদ স্থানে নোঙর করতে লঞ্চের চালক ও মালিকদের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
শনিবার দুপুরের পর যাত্রীর ভিড় বাড়তে থাকে সদরঘাটে। সন্ধ্যা নাগাদ যাত্রীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বিআইডব্লিউটিএ, লঞ্চমালিক ও কর্মচারীদের।
শুক্রবারের মতো শনিবারও কোনো কোনো গন্তব্যের লঞ্চ না পেয়ে যাত্রীদের ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাককর্মী সাকিবুল হাসান রাত আটটার দিকে ঘাটে এসে পটুয়াখালীর কোনো লঞ্চ পাননি। তিনি বরিশালের এমভি সুরভি-৭ লঞ্চে উঠেছেন। তিনি বলেন, ‘বরিশাল পর্যন্ত যাওয়ার পর সেখান থেকে বাসে পটুয়াখালী যাব।’
এদিকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বরিশালের কোনো লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যায়নি। ফলে বরিশালে যাওয়ার উদ্দেশে সদরঘাটে আসা যাত্রীদের অপেক্ষার সময় ছিল দীর্ঘ। রাত আটটার পর এসব লঞ্চ ছেড়ে যায়।
সরেজিমেন দেখা যায়, ছেড়ে যাওয়া কোনো লঞ্চই ধারণক্ষমতা হিসাব করে ছেড়ে যায়নি। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের কারণে কয়েকটি লঞ্চকে জরিমানাও করা হয়।
ঢাকা নদী বন্দর কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, ঈদের সময় যাত্রী স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় একটু বেশিই যায়। এ সময় লঞ্চগুলোকে কোনো মালামাল পরিবহন করতে দেওয়া হয় না। ফলে কিছু যাত্রী বেশি থাকলে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হয় না।
ঢাকা নদী বন্দরের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২৫টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে। রাত ১২টা পর্যন্ত আরও ২১টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেকাতে বিকেল ৫টা থেকে অভিযান পরিচালনা করছে বিআইডব্লিউটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের জন্য চারটি লঞ্চকে ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বিভিন্ন অনিয়ম করায় সদরঘাট অতিক্রম করা একটি বাল্কহেড, পণ্যবাহী দুটি ও একটি তেলের ট্যাংকারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সদরঘাটে যাত্রীদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে মোতায়ন রয়েছে নৌপুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ও জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকেরা। জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে বন্দর ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্থাপিত জরুরি চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকেরা।