শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল

মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে লাখো মানুষের ঢল পড়েছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দময় মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ ছুটছেন নাড়ির টানে।

শুক্রবার ভোর থেকে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ঈদ যাত্রীরা।

সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী ও মোটরসাইকেলের চাপে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে শিমুলিয়া ঘাট এলাকা।

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিকান্দি নৌরুটে ১০টি ফেরি চলাচল করার পরেও দুপুর আড়াইটার দিকে ঘাট এলাকায় প্রায় ৪ শতাধিক ছোট ছোট যানবাহন ফেরি পারাপারের অপেক্ষা দেখা গিয়েছে। সে সঙ্গে লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটেও ছিল যাত্রীদের গাদাগাদির চিত্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার ভোরে সেহরির পর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে ও মোটরসাইকেলে চড়ে যাত্রীরা শিমুলিয়া ঘাটে এসে উপস্থিত হতে শুধু করেন। অতিরিক্ত চাপে ঘাট এলাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

অসাধু বাস ব্যবসায়ীরা মাওয়া চৌরাস্তায় যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। ফলে ৩ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ঘাটে পৌঁছাতে হচ্ছে হাজারো যাত্রীদের। এতে রোজায় প্রচণ্ড গরমে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন তারা।

 

মাদারীপুরের আব্দুল মাঝি জানান, গুলিস্তান থেকে ডিএম পরিবহনে আসছি। মাওয়া চৌরাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। তারপর দুইটা ব্যাগ নিয়ে প্রায় ৩ কি.মি. রাস্তা পায়ে হেঁটে ঘাটে আসি। এখানে আবারও মানুষের ঢল। এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করেই লঞ্চ পারি দিতে হবে।

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে খুলনা যাবেন অলি মল্লিক। তিনি জানান ভোরের একটু আগেভাগে রওনা হয়েছি। ৩ ঘণ্টা পার হয়েছে আর কখন ফেরি পাবো জানি না। বেসরকারি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল শবনম জানান ঢাকা থেকে বাসে করে ঘাট এলাকায় এসেছি বাসের ভাড়া অতিরিক্ত অল্প কিছু নিয়েছে। তবে লঞ্চে পারি দেব প্রচণ্ড ভিড় কিন্তু লঞ্চ পেতে ভোগান্তি হয়নি। কলেজছাত্র আরিফিন মোল্লা জানান বাসে করে এসেছি সময় লাগেনি। তবে ঘাটের আগে নামিয়ে দিয়েছে। পরে পায়ে হেঁটে আসছি এখন স্পিডবোটে পাড়ি দেব তাড়াতাড়ি উপরে যাওয়ার জন্য। উপরের মোটরসাইকেলে করে শিবচরে যাব।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল বলেন, সকাল থেকে ৪ শতাধিক যানবাহন ও কয়েক শতাধিক মোটরসাইকেল পারাপার করা হয়েছে। বর্তমানে মোট ১০টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। বাংলাবাজার নৌরুটে সাতটি ও মাঝিরকান্দি নৌরুটে তিনটি ফেরি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাবাজার নৌরুটে একটি ফেরি বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে আমরা যাত্রীদের নির্বিঘ্নে পারাপার করতে সক্ষম হবো।

বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের বন্দর কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফেরির জন্য অপেক্ষা না করে যাত্রীরা লঞ্চ ও স্পিডবোটে পারাপারের জন্য ছুটছেন। ফলে এ ঘাটগুলোতে যাত্রীর ঢল পড়ে। ভোর থেকে ১৫৫টি স্পিডবোট ও ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে।

Leave a Comment