কাঙ্গো উপত্যকার পিগমিরা খর্ব হয় কেন?
কঙ্গো উপত্যকা ক্রান্তীয় বৃষ্টি বহুল অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে মধ্যাহ্নে সূর্য রশ্মি প্রায় সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয়। আর দিন ও রাত্রির পরিমাণও সারা বছর সমান থাকে।
উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের কাছে মিলিত হয়েছে। ফলে ইন্টার ট্রপিক্যাল কনভার্জেন্সে এর সৃষ্টি হয়েছে। এখানে প্রচন্ড উত্তাপ। উত্তাপের আধিক্য এবং প্রচুর বাতাসে জলীয় বাষ্প এখানকার অধিবাসীদের জীবন দূর্বিষহ করে তোলে।
অত্যাধিক উষ্ণতা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় তা উদ্ভিদের পক্ষে অনুকূল। তাই এখানে গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই অঞ্চলে মাটি খুবই অনুর্বর। বলে রাখা ভাল, বনভূমি দিয়ে মাটির উর্বরতা শক্তি বিচার করা যায় না।
মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং খুব বেশি এবং উত্তাপ খুব বেশি থাকার জন্য এখানকার মাটি দ্রুত ক্ষয় হয় এবং ধৌত প্রক্রিয়ার জন্য মাটির অধিকাংশ খনিজ পদার্থ ভূ-অভ্যন্তরে চলে যায়।
কঙ্গো উপত্যকার উপজাতিদের খাদ্যে শর্করা ও শ্বেতসার জাতীয় পদার্থের অভাব খুব বেশি থাকে। তাদের প্রধান খাদ্য ট্যাপিওকা, গাছগাছালির মূল, আলু, রাঙা আলু, ওল এবং চিনের দানা ও নিকৃষ্ট মানপর চাল। বাঁধাকপি, ফুলকপি, বীট, গাজর, বীন প্রভৃতির চাষ হয় না। তাই তাদের খাদ্যে ভিটামিনের, বিশেষ করে প্রোটিনের পরিমাণ খুবই কম থাকে।
বন থেকে শিকার করা পশু ও মাছের মাংস পরিমাণও থাকে নামমাত্র, যা শরীরের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। তাই এখানকার অধিবাসীদের খাদ্যে বিশেষ করে সুষম খাদ্যের যথেষ্ট অভাব দেখা যায়। তাই কঙ্গো উপত্যকার অধিবাসীদের শারীরিক বৃদ্ধি ঠিক মত হতে পারে না। অপুষ্টি রোগ ঘরে ঘরে আশ্রয় নেয়। তাই এখানকার মানুষ খর্বকায়। এদের গড় দৈর্ঘ্য চার ফুটেরও কম।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।