পৃথিবীর বৃহত্তম ফুল “র্যাশফ্লেশিয়া” আবিষ্কারের কাহিনী জানুন।
পৃথিবীর বৃহত্তম ফুলটির নাম র্যাশফ্লেশিয়া। সমুদ্রবেষ্টিত সুমাত্রা দ্বীপে এটিকে প্রথম দেখা গিয়েছিল। এ ফুলটি আবিষ্কার ও নামকরণের পিছনে সুন্দর একটি কাহিনি প্রআলিত রয়েছে।
অতিকায় এ ফুলটির রঙ এমন কিছু আকর্ষণীয় নয়। আবার গন্ধের বিচারেও এরা সমাদর পাওয়ার যোগ্য নয়। তবুও একমাত্র বৃহত্তম ফুল বলেই এর আবিষ্কারের সঙ্গে পৃথিবীর উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মধ্যে তুমুল সাড়া পড়ে গিয়েছিল। তবে আকৃতির বিচারে ফুলটি আলোড়ন সৃষ্টি করার মতোই বটে। একটি ফুলের ব্যাস পুরো দুই হাত বা তিন ফুট, কল্পনা করা যায়?
পৃথিবীর বৃহত্তম এই ফুলটির আবিষ্কারের কাহিনি মোটামুটি এরকম-
আজ থেকে প্রায় একশ’ আশি বছর আগে সুমাত্রা দ্বীপের শাসনকর্তা ছিলেন স্যার র্যাফ্লস। তিনি সম্পূর্ণ দ্বীপটিকে জরিপ করিয়ে নিজের শাসনাধীন এলাকা সমন্ধে সম্যক ধারণা নিতে উৎসাহী হলেন। এ কাজের দায়িত্বভার অর্পণ করলেন ডঃ আর্ণল্ড এর ওপর। কাজের দায়িত্ব নিয়ে তিনি কয়েকজন অধঃস্তন কর্মচারীকে নিয়ে জমি জরিপ করতে করতে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করলেন।
জঙ্গলটি একেবারে সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত। জঙ্গলটিতে অন্যান্য গাছের সঙ্গে সিসাস ভাইন নামক এক বিশেষ জাতের অতিকায় গাছও এখানে ওখানে ছিল। তারই গোড়ায়, প্রায় মাটি ঘেঁষে অতিকায় একটি ফুল দেখে ডঃ আর্ণল্ড বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়লেন। যেমন অতিকায় ফুল তেমনি অতিকায় তার পাপড়িগুলো। কাছে গিয়ে তিনি ফুলটিকে ভালো করে লক্ষ্য করলেন। খানিকপর অনুভব করলেন বাতাসে পঁচা ডিমের গন্ধ। বুঝতে অসুবিধা হলো না দুর্গন্ধটির উৎস অতিকায় ফুলটিই।
ডঃ আর্ণল্ড প্রথম দর্শনেই বলে উঠলেন- কী রাক্ষুসে ফুল রে বাবা! এবার ফুলের একটি পাপড়ি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখলেন। পাপড়িগুলো মোটা ও শাঁসালো, তবে খুবই ভঙ্গুর। গাছটি পরভোজী শ্রেণীর। অন্য একটি গাছ থেকে খাদ্য শোষণ করে বেঁচে থাকে।
ডঃ আর্ণল্ড ফুল ও তার গাছের বিস্তারিত বিবরণ লিখে এক কপি শাসনকর্তা স্যার র্যাফ্লেসের কাছে আর এক কপি পাঠিয়ে দিলেন বৃটিশ মিউজিয়ামের উদ্ভিদ বিভাগের প্রধানের কাছে।
তখন বৃটিশ মিউজিয়ামের উক্ত পদে আসীন ছিলেন রবার্ট ব্রাউন। তিনি ফুলটির পাপড়ি দেখে এবং ডঃ আর্ণল্ডের লিখিত বিবরণের উপর নির্ভর করে অতিকায় সে ফুলটির একটি মনগড়া ছবি আঁকলেন। আর তার নামকরণ করলেন স্থানীয় শাসনকর্তা র্যাফ্লেস এর নামানুসারে র্যাশফ্লেশিয়া।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া