“মা শা আল্লাহ্, আয়রা! তোর ভাগ্যটা কি ভালো রে! এত ভাল একজন লাইফ পার্টনার পেয়েছিস!”
_ছোটফুপির কথায় আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম।
বিয়ের পর থেকেই আমি বারংবার এই কথা শুনে আসছি। নিজেকে এখন আসলেই বেশ ভাগ্যবতী মনে হয়। “আয়ান” যেন আমার জীবনে আল্লাহ্ প্রদত্ত আশীর্বাদ।
.
প্রতিবছরের একটি দিনে আব্বু আমাদের সব আত্মীয়দের ইনভাইট করেন। আমরা যে যেখানেই থাকি, সবাই সব ব্যস্ততাকে ছুঁড়ে ফেলে আমাদের গ্রামের বাসায় চলে আসি।
এবারের সকল প্রকারের রান্না আমার বর “আয়ান” করবে।
উনি নিজেই এই প্রস্তাব ওনার শ্বশুরমশাই মানে আমার বাবাকে আগেই দিয়ে রেখেছেন। তার রান্নার হাত অবশ্য অতি চমৎকার, আলহামদুলিল্লাহ। ওকে হেল্প করবে ছোট ফুপা,বরব্বু,আব্বু আর চাচ্চুরা। তারা সবাই মিলে রান্নার সবরকম বন্দোবস্ত করে ফেলেছে। এখন রান্না হবে।
মা,চাচী, ফুপিরা মিলে আমরা সকলেই ড্রয়িংরুমের মেঝেতে বসে পড়লাম। আড্ডার বিষয়বস্তু “আয়রা ও তার জামাই”। কি যে বিব্রতকর একটা অবস্থা! তারই ফাঁকে ছোটফুপি প্রথমের কথাগুলো আমাকে বলেছিল।
.
আয়ান বেশ লম্বা, নাকটা উঁচু, নাকের ডগায় শিশিরের মতো বিন্দু বিন্দু জল সবসময়ই দৃশ্যমান, লালচে ফর্সা গায়ের রং, বডি ফিটনেস পারফেক্ট, ঈষৎ রক্তিমাভাব হাস্যোজ্জ্বল ওষ্ঠাধর, নীচের ঠোঁটের বাঁ দিকের দুই ইঞ্চি নীচে একটা ছোট্ট কালো তিল রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা তাকে যেন নিঁখুতভাবে সৃষ্টি করেছেন।
অচেনা জায়গা,অচেনা পরিবেশ,অচেনা মানুষের সাথে খুব অল্প সময়েই সে মিশে যেতে পারে। তার সঙ্গে কেউ একবার মিশলে খুব সহজে ভুলতে পারবেনা। এছাড়া তার মার্জিত আচরণ এবং বাকপটুতা সবার নজর কাড়ে। মূলকথা, তার ব্যক্তিত্বই আকর্ষণীয়।
আমি তার স্ত্রী হিসেবে যথেষ্ট সম্মান এবং ভালোবাসা দুটোই পাই। আমি না বলতেই সে আমার মনের কথা বুঝে ফেলে, আমার খারাপ লাগা, ভালোলাগা সব দিকেই তাঁর তীক্ষ্ণ নজর। মাঝেমধ্যেই একগাদা গিফট, ছোট ছোট চিরকুট দিয়ে চমকে দেয়। আমার ইচ্ছাকে খুব মূল্যায়ন করে সে। অনেক বেশি রোমান্টিক। আরও অনেক গুণ আছে তার। ওগুলো বলতে গেলে মূল গল্প আর বলাই হবে না।
আড্ডার ফাঁকে আম্মু বিশাল দু’টো ট্রে নিয়ে এলেন। তাতে নানারকম ফল কেটে সাজানো। ছোটফুপিকে হেসে বললেন, রাইসা একটা ট্রে রাঁধুনিদের দিয়ে এসো!
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya