ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই ছেলেকে মিষ্টির সঙ্গে বিষ খাওয়ানোর পর ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে নাপা সিরাপ খাওয়ানোর কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন মা। সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় শিশুদের মাকে গ্রেপ্তারের পর তিনি এসব কথা বলেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, দুই শিশুর মা লিমা বেগম চাতালে কাজ করতেন। সেখানে শফিউল্লাহ নামের শ্রমিকদের সরদারের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক হয়। তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এ ক্ষেত্রে বাধা ছিল দুই ছেলে ইয়াসিন খান (৭) ও মুরসালিন খান (৪)। তাঁরা দুই শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এর অংশ হিসেবে ঘটনার দিন মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দুই শিশুকে খাওয়ান তাদের মা। ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে এর এক ঘণ্টা পর দুই শিশুকে নাপা সিরাপ খাওয়ানো হয়। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য লিমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে তাদের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বাবা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় শিশুদের মাসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর পুলিশ দুই শিশুর মা লিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল রাতেই দুই শিশুর মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের নজরপাড়া গ্রামের দুই শিশু ইয়াসিন ও মুরসালিন মারা যায়।এ ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি হয়েছে। ঢাকার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ছয় সদস্যের একটি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক মহিউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে।