Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    • Home
    • Rangpur
    • International
    • Islamic
    • Life Style
    • Insurance
    • Health
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী

    ভুয়া বিল–ভাউচারে পথশিশু পুনর্বাসন কার্যক্রম

    নিজস্ব প্রতিবেদকBy নিজস্ব প্রতিবেদকMarch 7, 2022Updated:March 7, 2022No Comments5 Mins Read
    Default Image

    দুপুরে ভাত খেতে বসেছে ৭১টি শিশু। আয়োজন আলু–মুরগির মাংসের তরকারি, সঙ্গে পাতলা ডাল। কয়েকটি শিশুর প্লেটে চোখ রেখে দেখা গেল, বড় বড় আলুর টুকরোর পাশে মাথা উঁচু করে আছে মুরগির পা। এই পা সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। একজন শিশু নিচু স্বরে বলল, ‘আপা-ভাইয়ারা প্লেটে খাবার তুলে দেন।’এই শিশুরা রাজধানীর কমলাপুরের পথশিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রের বাসিন্দা। ২৩ ফেব্রুয়ারি সেখানে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেল।রাজধানীতে আরেকটি পথশিশু পুনর্বাসনকেন্দ্র রয়েছে কারওয়ান বাজারে। দুটি কেন্দ্রের খাবারের অবস্থাই কমবেশি একই রকম।

    মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১৬ সাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্র দুটি পরিচালিত হচ্ছে। এখানে কর্তৃপক্ষ নিজেরা রান্না করে শিশুদের খাওয়ায়। মাস শেষে বিল জমা দেওয়া হয় দুটি ডালভাতের হোটেলের নামে। কিন্তু নির্ধারিত ঠিকানায় গিয়ে একটি হোটেলও পাওয়া যায়নি। হোটেল দুটির মালিকও বিলের বিষয়ে জানেন না।আশ্রয়কেন্দ্রের একাধিক কর্মী বললেন, দরপত্র ছাড়াই এ ধরনের কার্যক্রম চলছে। ভুয়া বিল মানেই তো একটা অনিয়ম। আর অনিয়মের মধ্যে টাকাপয়সার একটা বিষয় তো থাকেই।মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমের পরিচালক মোহাম্মদ মাসহুদুল কবীর বলেন, ‘সরকারি কার্যক্রমে দরপত্র না থাকা একধরনের অনিয়ম। বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কেনা খাবারের পরিবর্তে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। দিনপ্রতি শিশুদের জন্য বরাদ্দ ১৪০ টাকার মধ্যেই বিল করা হচ্ছে। আর্থিক কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হচ্ছে না।’ তবে শিগগিরই দরপত্র প্রক্রিয়ায় তাঁরা যাবেন বলে জানালেন তিনি।

    ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে কার্যক্রমের অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস ও মো. আবুল কালাম আজাদের সমন্বয়ে গঠিত দল ১০ ফেব্রুয়ারি কমলাপুর কেন্দ্রটিতে অভিযান চালান। তবে দুদক এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে কিছু জানায়নি।পুনর্বাসন কার্যক্রমে প্রথম পরিচালক ছিলেন মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রকল্পের তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে ছিলেন। শিশুদের খাবার দরপত্রের মাধ্যমে না দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কোন বেলায় কতজন শিশু খাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। তাই দরপত্র দেওয়া হয়নি। তবে সরকারি কার্যক্রমে এটা হওয়া উচিত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

    তিনি উল্লেখ করেন, তাদের কার্যক্রমেরও অডিট হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করা হয়নি। বর্তমান পরিচালক মোহাম্মদ মাসহুদুল কবীর জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে আর কোনো অডিট হয়নি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে পথশিশুদের পুনর্বাসনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পথশিশুদের ওপর পরিচালিত ভিত্তি জরিপের পর কার্যক্রম শুরু করে। এই মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে অর্থ মন্ত্রণালয় খাত তৈরি করে প্রথমে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। শুরু থেকেই এতে জনবল নিয়োগের খাত রাখা হয়নি। দৈনিক ৫০০ টাকা (বর্তমানে ৬০০ টাকা হয়েছে) মজুরির ভিত্তিতে জনবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

    ২০২১-২২ অর্থবছরে এ কার্যক্রমে বরাদ্দ রাখা হয় ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি টাকা। ওই বছর ব্যয় হয় ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ৫১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়।দুটি কেন্দ্রের জন্যই চাল–ডালসহ বিভিন্ন পণ্য যাত্রাবাড়ীর সজীব এন্টারপ্রাইজ থেকে কেনা হয়। মাছ, মাংস সবজি কেনা হয় কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ী থেকে। দুই কেন্দ্রেই মাসে খাবারের জন্য গড়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে খাদ্যদ্রব্য খাতে বরাদ্দ আছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যান্য মনিহারি পণ্য বাবদ বরাদ্দ আছে ১০ লাখ টাকা।দুটি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও পথশিশুদের জন্য ৯টি আউটরিচ স্কুলে ২৭০ জনের পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। এদের টিফিনের জন্য বরাদ্দ জনপ্রতি ৪০ টাকা।

    পথশিশু পুনর্বাসন কার্যক্রমের শুরুতে বেসরকারি সংগঠন অপরাজেয় বাংলাদেশ যুক্ত ছিল। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু  বলেন, মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি ছিল। এরপর চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে গড়িমসি করা হয়। তারপরও সংস্থাটি প্রায় চার বছর কাজ করে। তবে বিল-ভাউচার বা টাকাপয়সার বিষয়টি দেখভাল করতেন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। তিনি বলেন, কার্যক্রমে স্বচ্ছতার অভাব থাকায় অপরাজেয় বাংলাদেশ এ কার্যক্রম থেকে সরে আসে।

     

    হোটেলমালিকেরা অবগত নন
    যে দুটি হোটেলের নামে বিল-ভাউচার করা হচ্ছে, তার একটি চাঁদপুর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। ক্যাশ মেমোতে কারওয়ান বাজারের ঠিকানা দেওয়া। ৬ থেকে ৭ বছর আগে জায়গা পরিবর্তন করে গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় স্থানান্তরিত হয়েছে এটি। ক্যাশ মেমোতে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে ফোন করলে মালিক মো. আসলাম জানালেন, তিনি সরকারের এ কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু জানেন না। তাঁর ভাত-তরকারির হোটেলটিও বেশ ছোট।

    অন্য আরেকটি হোটেলের নাম উত্তর যাত্রাবাড়ীর ভোজনবিলাস হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। হোটেলের মালিকের ছেলে মো. ফয়সাল খান জানালেন, বিল-ভাউচারের বিষয়ে তিনি বা তাঁর বাবা কিছু জানেন না। বললেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করলেই সত্যটা বুঝতে পারবেন।এ দুই রেস্তোরাঁর মালিকেরাই তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে সরকারি কার্যক্রমের বিল-ভাউচার করায় তাঁরা কোনো বিপদে পড়বেন কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

    সরেজমিন দুটি কেন্দ্র
    গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে কমলাপুর ও বিকেলে কারওয়ান বাজার কেন্দ্রে গিয়ে শিশু ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়। কমলাপুর কেন্দ্রে ১১টি মেয়েশিশু থাকে দীর্ঘদিন ধরে। কারওয়ান বাজার কেন্দ্রটি শুধু ছেলেশিশুদের জন্য।কমলাপুর কেন্দ্রের একটি শিশু বেলাল। পথে থাকার সময় ট্রাক থেকে মরিচ কুড়াত। কেন্দ্রে আসার পর তাকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। গত নভেম্বরে কাউকে কিছু না বলে সে চলে যায়। সম্প্রতি আবার ফিরে আসে। জানাল, ‘ঘুরতে চট্টগ্রাম গেছিলাম।’ এখন আবার স্কুলে ভর্তি হতে চায়। কেন্দ্র দুটির কর্মকর্তারা বলছেন, পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শিশুদের চলে যাওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

    কমলাপুর কেন্দ্রটিতে মেয়েদের শৌচাগার ও গোসলখানা বেহাল। রান্নাঘরটি ছোট। শৌচাগারের সঙ্গে মেয়েদের গোসলের জায়গা যেখানে, সেখানেই রান্নার চাল, ডাল, মাছ মাংস ধোয়া হয়। কাপড় শুকানোর ব্যবস্থা নেই। ঘরে ফ্যান ছেড়ে বা সিঁড়ির রেলিংয়ে কাপড় শুকাতে হয়। বিছানার চাদর, পর্দা ধোয়া হয় মাসে একবার। চারপাশে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। তেলাপোকা ঘুরে বেড়ায় নির্বিঘ্নে।কারওয়ান বাজার কেন্দ্রটিতে ওই দিন বিকেলে উপস্থিত ছিল ৭১টি শিশু। শিশুদের অনেকের শরীরে চুলকানি দেখা গেল।

    কেন্দ্রে শিশুরা নিজেদের কাপড় ধোয়া, খাওয়ার পর প্লেট ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজ করে। কমলাপুর কেন্দ্রের মেয়েশিশুদের সেখানকার স্টাফদের অনেক কাজ করে দিতে হয়। স্টাফরা পথশিশুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, এমন অভিযোগও আছে।পথশিশু পুনর্বাসন কার্যক্রমের পরিচালক মোহাম্মদ মাসহুদুল কবীর গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমান কার্যক্রমের নানান সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে নিয়েই এ কর্মকর্তা বললেন, প্রকল্পটি সারা দেশে বাস্তবায়িত হলে পথশিশুদের পুনর্বাসন দৃশ্যমান হবে।

     

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    • Website

    নিজস্ব প্রতিবেদক বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে পাঠকের কাছে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছে দেয়। তারা ঘটনার প্রকৃত তথ্য ও বিশ্লেষণ তুলে ধরে যাতে পাঠক বিস্তৃত ও স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারেন। নিজস্ব প্রতিবেদকদের লক্ষ্য হলো দ্রুত এবং নিখুঁত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাজে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক
    • যৌনসম্পর্কে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আস্থা গড়ে তোলার কৌশল
    • যৌনরোগ (STD) প্রতিরোধের উপায় ও সচেতনতা
    • দাম্পত্য জীবনে যৌনসম্পর্কের মানসিক উপকারিতা
    • সুস্থ যৌনজীবনের জন্য জরুরি ১০টি পরামর্শ
    • গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর যত্নের সম্পূর্ণ গাইড
    • ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার কৌশল
    • ডিপ্রেশন মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সমাধান
    • ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা
    • শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার উপায়
    • শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস
    • গরমে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় ও বর্জনীয়
    • শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব
    • মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকার কৌশল
    • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
    • চোখের সুস্থতা বজায় রাখার ঘরোয়া টিপস
    • হার্টের যত্নে কোন খাবার বেশি খাবেন
    • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি
    • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়
    • প্রেমে একে অপরকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব
    • দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন করে সাজানোর কৌশল
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.