:এই প্রগাঢ় রাতের অন্ধকারে একা বসে আছো যে?
-ভালো লাগে তাই।
:কী ভালো লাগে? অন্ধকার?
-হুম। নির্জন নিস্তব্ধ রাতের অন্ধকার।
: তাই? অন্ধকারও আবার কারো ভালো লাগে? আমার তো বেশ কৌতূহল হচ্ছে। ঝলমলে দিনটাকে কালো কফিনে মোড়ানো এই নির্জন নিস্তব্ধ রাত তোমার কেন ভালো লাগে, আমাকে বলবে?
-নাহ্।
: ওমা! নাহ্ কেন?
-দু’টো কারণ আছে। প্রথমত, এই কথাগুলো তোমার কাছে জাস্ট পাগলামি মনে হবে। দ্বিতীয়ত, তুমি সারাটা রাত ঘুমে বিভোর থাকো। তোমাকে বলে কোনো ফায়দা নেই। তুমি এর যথার্থতা উপলব্ধি করতে পারবে না। তুমি বরং ঘুমিয়েই পড়ো।
:পাগলামি মনে হবে না। তুমি বলো। আজ আমি ঘুমোবো না। তোমার সাথেই জেগে থাকবো। তোমার ভালো লাগা এই অন্ধকারে কী সুখ আছে, আমিও তাই উপভোগ করবো। নাও শুরু করো না, প্লিজ!
-আচ্ছা, ঠিক আছে। শোন তাহলে-
অন্ধকার রাতের নিঃশব্দতার একটা অপূর্ব ছন্দ আছে। খুব মন দিয়ে সেই ছন্দ শুনতে হয়। শুয়ে থেকে সেই ছন্দ ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায় না। সেজন্য আমি বসে থেকে শুনি। বেশ তৃপ্তি পাই, জানো?
:বাহ্! বেশ ইন্টারেস্টিং তো। আর কী খুঁজে পাও এই আঁধারের মাঝে?
-অন্ধকারের কালো পর্দায় নতুন কবিতার পঙক্তিরা এসে সুডোকু সাজায়। আমি ওদের নিয়ে খেলি। অদ্ভুত এক আবেশে মিশে যাই। খানিকবাদেই আমি আমার আমিত্বকে আবিষ্কার করি। দেখতে পাই এক ব্যতিক্রম আমিকে। যে আমিতে সম্ভাবনা আর প্রতিভারা লুপ্ত থাকে না। খোলস থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে এসে আমার সামনে ধরা দেয়।
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি। কখনও কখনও আত্মতৃপ্তিতে আমার চোখের জল বেরিয়ে এসে আমাকে স্বাগত জানায়।
ঘুমিয়েছো তুমি?
:উঁহু! শুনছি। তুমি বলো। তারপর?
এভাবে কথোপকথন চলতে চলতে একসময় কলেবর ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু আত্মা বলতেই থাকে তার সকল ভালোলাগা মেশানো কথা।
Writer: Mahazabin Sharmin Priya