ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিট বাদ দিয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে চারটি ইউনিটের (ক, খ, গ ও চ) অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তের পর ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল ঠেকাতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকদের একটি অংশ।
‘পরীক্ষার বোঝা ও ভোগান্তি’ কমানোর যুক্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘ ইউনিট বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পঠিত বিভাগ পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার্থীরা ইউনিটটির অধীন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় ঘ ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিভাগ পরিবর্তনের একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ডিনস সাবকমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।ঘ ইউনিট বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলার মধ্যে রোববার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকদের একটি অনানুষ্ঠানিক সভা হয়েছে। সভায় শিক্ষকেরা ঘ ইউনিট বহাল রাখার পক্ষে আন্দোলন করতে সম্মত হয়েছেন। সেই লক্ষ্যে সভা থেকে ‘ঘ ইউনিট সর্বদলীয় আন্দোলন কমিটি’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম ও সাদা দলের একই অনুষদ শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দেবাশীষ কুমার কুণ্ডুকে প্রস্তাবিত কমিটিতে সহসদস্যসচিব করা হয়েছে।কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রস্তাবিত অনানুষ্ঠানিক কমিটি। চূড়ান্ত রূপ নিতে আরও দু-এক দিন লাগবে। ঘ ইউনিট বহাল রাখার পক্ষে আমরা আন্দোলনে যাচ্ছি, এটি নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। দু-এক দিনের মধ্যেই আন্দোলনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।’
ঘ ইউনিট বহাল রাখার পক্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমানও। তবে শিক্ষকদের আন্দোলনের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। জিয়া রহমান বলেন, ‘ঘ ইউনিট বহাল রাখার পক্ষে অনুষদের শিক্ষকদের মধ্যে একটা সেন্টিমেন্ট ও ঐক্য আছে। সেটিকে ধারণ করে আমি আমার পক্ষ থেকে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ সবার সঙ্গে কথা বলছি। ডিন হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে আমি শিক্ষকদের সেন্টিমেন্টকে ধারণ করছি। ঘ ইউনিট রাখার পক্ষে আমিও আছি।’শিক্ষকদের আন্দোলন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখতে হবে। এর ওপর কোনো স্বার্থ নেই। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুটি বিষয়ই আমাদের প্রধান উপজীব্য। ব্যক্তি এখানে গৌণ বিষয়।’